ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

আত্রাইয়ে দুই সেতু নিয়ে রশি টানাটানি

উন্নয়নবঞ্চিত শতাধিক গ্রাম

​​​​​​​নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ

প্রকাশিত: ২১:২৪, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

উন্নয়নবঞ্চিত শতাধিক গ্রাম

আত্রাই নদীর সমসপাড়া ঘাটে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

নদী বিল বেষ্টিত উপজেলা আত্রাই। এই উপজেলার আত্রাই নদীর সমসপাড়া ফেরিঘাট ছোট যমুনা নদীর আটগ্রাম ভুপনার ঘাটে দুটি সেতুর অভাবে এখনো নৌকাতেই ভরসা করতে হয় শতাধিক গ্রামের কয়েক লাখ মানুষকে। বছরের পর বছর বিভিন্ন সময়ে এই দুটি ঘাটে সেতু নির্মাণের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলেও আজও দৃশ্যমান কোনো কাজ শুরু না হওয়ায় হতাশ এই অঞ্চলের বাসিন্দারা। এই দুটি শতবর্ষী ঘাটে সেতু নির্মাণ স্থানীয়দের প্রাণের দাবি।

সমসপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, উত্তরা গণভবন থেকে সড়ক পথে কবিগুরুর কাছারিবাড়ি আত্রাই উপজেলার পতিসরের সঙ্গে সরাসরি সহজ যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে ভাঙ্গাজাঙ্গাল হয়ে সমসপাড়া দিয়ে চলাচলের পথ। কিন্তু আত্রাই নদীর ভাঙ্গাজাঙ্গাল-সমসপাড়া ফেরিঘাটে একটি সেতুর অভাবে সেই সহজ পথ কঠিন হয়ে আছে।

বিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন তোফা বলেন নদীর দক্ষিণ পাশের মানুষদের নদীর উত্তর পাশের সমসপাড়া বাণিজ্য কেন্দ্রে যেতে হয়। জরুরী রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে, কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিক্রি করাসহ সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে সকল শ্রেণিপেশার মানুষদের ঘাটে এসে নৌকায় পার হয়ে যেতে হয় সমসপাড়াতে। তাই ঘাটে এসে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টা সময়। শুষ্ক মৌসুমে পারাপার সহজ হলেও বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট বাহনসহ সকল বয়সের মানুষকে নৌকা করেই নদী পার হতে হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য এই ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের জন্য একাধিকবার সংসদে দাবি জানিয়েছেন তবুও কোনো আশার আলো আমরা দেখতে পাচ্ছি না। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন এই দুই ঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলে তা বাতিল করা হয়েছে। আবার নতুন করে প্রস্তাব ওপরমহলে পাঠাব। সেই প্রস্তাব যদি অনুমোদিত হয় তাহলে দুই ঘাটে সেতু নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

নওগাঁ- (আত্রাই-রানীনগর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন দুই ঘাটে দুটি সেতু নির্মাণ ওই অঞ্চলের শতাধিক গ্রামের লাখ লাখ মানুষের বহু বছরের প্রাণের দাবি। আমি এমপি হওয়ার পর থেকে জাতীয় সংসদে দুটি ঘাটে দুটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। দুটি সেতুর অভাবে এই অঞ্চলগুলো উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত হতে পারছে না। এই অঞ্চলগুলো পিছিয়ে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই দ্রুত দুটি ঘাটে দুটি সেতু নির্মাণের জন্য আমি মানবিক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

২১ গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা থেকে জানান, আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চড়কগাছিয়া তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের কলারং গ্রামের মধ্যখানে প্রবাহমান পচাকোড়ালিয়া নদী। দুই উপজেলার দুই ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষের মেলবন্ধন বাঁশের সাঁকো। ওই সাঁকো দিয়ে ২১ গ্রামের মানুষের পারাপার হয়। নড়বরে সাঁকো দিয়ে গত ৪০ বছর ধরে দুই ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করছে। কিন্তু যুগের পর যুগ চলে গেলেও সাঁকোটির কোনো পরিবর্তন হয়নি। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ২১ গ্রামের মানুষ। দুই ইউনিয়নের মানুষের মেলবন্ধন আরও শক্ত করতে দ্রুত ওই বাঁশের সাঁকোটি সেতুতে রূপান্তর করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলিফ রায়হান বলেনবিদ্যালয় যেতে বাঁশের সাঁকোই আমাদের একমাত্র ভরসা। শিক্ষা প্রসারে দ্রুত বাঁশের সাঁকোটি সেতুতে রূপান্তরের দাবি জানান তারা। 

পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) সুপারিশ করা হবে।

আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন মালা বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডি কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেতু নির্মাণের জন্য জোর  প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী ইমতিয়াজ হোসাইন রাসেল বলেন, একশমিটারের চেয়ে বড় আকারের সেতু নির্মাণের জন্য আলাদা প্রকল্প প্রয়োজন। এই খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব তৈরি করে সফট কপি ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখান  থেকে প্রক্রিয়া শেষে অনুমোদন হলে কার্যক্রম শুরু করা হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।

×