ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিরামপুরে নদীর দুই পাড়ে ৫০ হাজার মানুষের বসবাস

নড়বড়ে সাঁকোতেই পারাপার

নিজস্ব সংবাদদাতা, বিরামপুর, দিনাজপুর

প্রকাশিত: ০০:৪৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নড়বড়ে সাঁকোতেই পারাপার

নলশীসা নদীর লালঘাট ও সদরঘাটে পাকা সেতু না থাকায় ভরসা বাঁশের সাঁকো

নলশীসা নদীর লালঘাট ও সদরঘাটে নেই কোনো সেতু। ফলে দিনাজপুরের বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার জনগণকে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দিনাজপুরের বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার বুক চিরে বয়ে গেছে নলশীসা নদী। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় নদীর দুই পাড়ের মানুষ জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে গ্রাম থেকে শহরে আর শহর থেকে গ্রামে যাওয়া-আসা করেন। নদীর দুই পাড়ে বসবাস করেন ১৭ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। কিন্তু নদী পারাপারের জন্য নেই কোনো সেতু। দুই ঘাটের নড়বড়ে দুটি সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করেন জনসাধারণ। কিন্তু সাঁকোতে কোনো গাড়ি চলাচল না করায় তারা নিত্যদিন ভোগান্তি পোহান।
স্থানীয়রা জানান, লালঘাটের পূর্ব পাশে নবাবগঞ্জ উপজেলার গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের মহিষবাতান, রঘুনাথপুর, লাইকারচড়া, পাদমপুর, হরিপুর, বস্তাপাড়া, মলচাঁদ গ্রাম এবং পশ্চিম পাশে বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের সোনাঝুড়ি, দীঘলচাঁদ, ঘোড়াপাথর, নটকুমারি, করমতলি ও রতনপুর গ্রাম। লালঘাট এলাকার নলশীসা নদীর দুই পাড়ের ওই ১৩ গ্রামের মানুষ এখন একটি জরাজীর্ণ সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল করছেন।
লালঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে সদরঘাট। এখানে নলশীসা নদী পারাপারের জন্য একটি নড়বড়ে সাঁকো আছে। সদরঘাটের পূর্ব পাশে পাদমপুর, গরীবপাড়া, বস্তাপাড়ার একাংশ, হরিপুর এবং পশ্চিম পাশে ধানঝুড়ি, নেটাশন, বটতলি ও ধাকন্দ গ্রাম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নলশীসা নদীর দুই পাড়ে ৫০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে প্রায় ২০ হাজার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী। তাদের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম নদীতে বাঁশের সাঁকো। নলশীসা নদীর ওপরে লালঘাট ও সদরঘাটে প্রায় ৬০ মিটার দীর্ঘ বাঁশ ও কাঠের তৈরি দুইটি নড়বড়ে সাঁকো।
সাঁকো পারাপারের সময় সাঁকোতে পা রাখতেই সাঁকো দুলতে থাকে। যে সাঁকো দিয়ে হেঁটে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ, সেখানে মোটরসাইকেল বা যাত্রীবাহী ভ্যান নিয়ে চলাচল করা আরও কঠিন। সাঁকো তৈরির উপকরণ বাঁশ ও কাঠ হওয়ায় বছর না যেতেই সাঁকোর খুঁটি ও পাটাতনগুলো নষ্ট হয়ে যায়। জরুরি প্রয়োজনে কেউ রিক্সা-ভ্যানে সাঁকো পারাপার হলে সাঁকোর মাথায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে রিক্সা-ভ্যান ঠেলে পার করতে হয়। পরে আবার অপর মাথায় গিয়ে যাত্রীকে ওঠাতে হয়।
দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক জানান, ‘নেটাশন ঘাটে (সদরঘাট) প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলজিআরডি মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। তবে নেটাশন ঘাট দিয়ে লোকজনের চলাচল কম হওয়ায় লালঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য আবারও একটি ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব শীঘ্রই সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
বিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী আতাউর রহমান বলেন, ‘নেটাশন ঘাটে সেতু নির্মাণের জন্য সেখানের মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এলজিইডির জেলা কার্যালয় উপজেলা কার্যালয় থেকে একটি প্রাক্কলন চেয়েছে। সেটি অনুমোদন হলেই সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হবে।’

×