ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১

লিঙ্গ পরিবর্তন করে বিয়ের পর প্রতারণা

প্রকাশিত: ২০:০৬, ৪ জুন ২০২৩

লিঙ্গ পরিবর্তন করে বিয়ের পর প্রতারণা

বিয়ের পর তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

ফেনী সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় নুর নবী জুলফিকার নামে এক ব্যক্তির। একপর্যায়ে একে অপরের প্রতি আসক্তি থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ওই শিক্ষার্থীকে ভারতে নিয়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করেন জুলফিকার। এরপর তারা বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।

জুলফিকার দাগনভূঞা উপজেলার সেকান্দরপুর গ্রামের মিয়াজী বাড়ির বাসিন্দা। লিঙ্গ পরিবর্তন করে নারী হওয়া ওই শিক্ষার্থীর বাড়ি পাশের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। সে বর্তমানে একটি বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলকাতার এক নার্সিং হোমে দু’বার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করা হয়। সেখান থেকে ফিরে ২০১৮ সালে ২৭ জুন নোয়াখালীর জুডিসিয়াল আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে তার নাম পরিবর্তন করা হয়। ২০১৯ সালের ১৪ জুন পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে তাকে বিয়ে করেন জুলফিকার। এরপর তাকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে সহায়তার জন্য আবেদন করায় জুলফিকার।

দাগনভূঞা আতাতুর্ক স্কুল-মার্কেটের মিয়াজী মেডিকেল হলের ব্যবসা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রাপ্ত সহায়তা, ব্যাংক ঋণ, জায়গা বিক্রিসহ কুলসুমের প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারক স্বামী জুলফিকার। পরে লিঙ্গ পরিবর্তন করে নারী হওয়া ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসা বাবদ এ টাকা খরচ হয়েছে বলে দিতে অস্বীকৃতি জানায় জুলফিকার। একপর্যায়ে তাকে তালাক দেওয়া হলে পাওনা টাকা পরিশোধে গড়িমসি করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে রামনগর ইউনিয়ন পরিষদে সালিসি বৈঠকে দেনমোহর ছাড়া বাকি টাকা দিতে তিনি নারাজ।

এদিকে, প্রতারণা ও টাকা আত্মসাৎ এবং মারধরের অভিযোগ এনে দাগনভূঞা থানা ও আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী জানান, প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার লিঙ্গ পরিবর্তন করে বিয়ে করেছে জুলফিকার। তাদের সংসারে এক মেয়ে রয়েছে। তাকে কখনও ছেড়ে যাবে না মর্মে অঙ্গিকার করলেও তালাক দিয়ে তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। তিনি প্রতারক স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

অভিযুক্ত নুর নবী জুলফিকারের বক্তব্য জানতে আজ রবিবার একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

স্থানীয় রামনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, সালিসের রায় মেনে নেওয়ার অঙ্গিকার করলেও পরে কাবিনের টাকা ছাড়া আর কোন দাবি মানবে না বলে সাফ জানান জুলফিকার। ফলে বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে যায়।

এমএইচ

×