ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বউয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাড়িওয়ালার মারধরে প্রাণ গেল প্রকৌশলীর

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ২৯ মার্চ ২০২৩

বউয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাড়িওয়ালার মারধরে প্রাণ গেল প্রকৌশলীর

আব্দুল্লাহ আল-সোহান

কানাডায় গিয়ে পিএইচডি করা হলো না মো. আব্দুল্লাহ আল-সোহানের (২৮)। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাড়িওয়ালাদের মারধরে তাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মানিকনগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা ইউনুস খান। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাড়িওয়ালা জামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত সোহানের বাবা ইউনুস খান বলেন,  সম্প্রতি আমি জানতে পারি দোলা নামে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছে ছেলে সোহান। কিন্তু বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। মঙ্গলবার রাতে আমার ছেলে ওই মেয়ের বাসায় যায়। পরে সন্দেহ করে আমার ছেলেকে মারধর করে বাড়িওয়ালা জামালসহ কয়েকজন হত্যা করে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমার ছেলে যদি বিয়ে না করে ওই বাসায় যায়, তাহলে পুলিশকে খবর দিতে পারত। অথবা তাদের উদ্দেশ্য যদি খারাপ থাকে কিছু টাকা-পয়সা নিয়ে আমার ছেলেকে ছেড়ে দিতে পারত। কিন্তু তারা তা না করে আমার একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলল। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

আমি বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছি। তিনি বলেন, আমার ছেলে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স শেষ করেছে। আগামী এপ্রিলের ২২ তারিখে পিএইচডি করার জন্য কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। সে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করত। দেশের বাইরে চলে যাবে সেজন্য কয়েকদিন আগে সে চাকরিটা ছেড়ে দেয়। কিন্তু তার কানাডা যাওয়া হলো না। এই দুষ্কৃতকারীরা আমার একমাত্র ছেলেকে হত্যা করেছে। 
যাত্রাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মফিজুল আলম বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মানিকনগরে মনোয়ারা হাসপাতালের পেছনে ওই যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাত ১২টার দিকে মযনাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। 
নিহতের বাবা বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনায় অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা জামালসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসার মালিক জামাল উদ্দিন এবং স্থানীয়রা দোলা ও সোহানের কাছে বিয়ের বিষয়ে জানতে চান। এরপর দোলা বিয়ের কাগজপত্র তাদের দেখান। দেখানোর পরই তারা দোলার কাছ থেকে জোরপূর্বক সোহানকে ছিনিয়ে নিয়ে বাসার পাশে নিয়ে কিল-ঘুষি ও চর-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। পরে সোহান অচেতন হয়ে পড়লে তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

×