ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চার গ্রামবাসীদের ভরসা বাঁশের সাঁকো

সংবাদদাতা, চাটমোহর, পাবনা

প্রকাশিত: ২১:২৫, ১৯ মার্চ ২০২৩

চার গ্রামবাসীদের ভরসা  বাঁশের সাঁকো

ছাত্রছাত্রীসহ চার গ্রামের মানুষ পারাপার হয়

পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নে স্থলগ্রাম নলডাঙ্গা গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে হান্ডিয়াল কাটা নদী। নদীর দুপাড়ে চারটি গ্রামের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকা। একটি ব্রিজের অভাবে দুপাড়ের মানুষ বর্ষায় নৌকা এবং খরা মৌসুমে বাঁশের তৈরি সাঁকোর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেন।

তাই এই দুর্ভোগ লাঘবে নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবি এলাকাবাসী। উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের স্থল, নলডাঙ্গা, চর এনায়েতপুর মিলনচর এই ৪টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের ভরসা একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ  কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও একটি ব্রিজ কপালে জোটেনি চার গ্রামের মানুষের।

স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ জরুরি কোনো রোগীকে হাসপাতালে নিতে এবং সাধারণ মানুষকে বর্ষায় নৌকা খরা মৌসুমে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। একটি ব্রিজের অভাবে এলাকার কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল পারাপারসহ ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নদীপাড়ে অবস্থিত নলডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, নদীর ওপর একটি ব্রিজ একান্ত প্রয়োজন। ব্রিজ না থাকায় আমাদের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী দীর্ঘদিন থেকে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। একটি ব্রিজ না থাকায় এলাকার স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী নৌকা বা বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে নদী পাড় হতে হয়। ব্রিজটি নির্মাণ হলে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী প্রতিদিন যথাসময়ে স্কুলে আসা দুর্ঘটনার আশঙ্খা থেকে রক্ষা পেত। ইতোপূর্বে বাঁশের সাঁকো পাড় হয়ে স্কুলে আসার সময় পা ফসকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে অনেক ছাত্রী। এমনকি বর্ষা মৌসুমে ডিঙ্গি নৌকা ডুবে বড় দুর্ঘটনায়ও পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পড়ালেখা থেকে অকালেই শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। 

নলডাঙ্গা গ্রামের সন্তান রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার শহীদুল ইসলাম জানান, বর্ষাকাল এলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার সবাই ডিঙি নৌকায় নদী পারাপার হয়ে থাকে। কৃষিপ্রধান এলাকায় যোগযোগ ব্যবস্থার অভাবে মাঠ থেকে ফসল আনা- নেওয়া বা কেউ অসুস্থ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। এলাকার অসুস্থ রোগীদের পল্লী চিকিৎসকরাই একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী জনপ্রতিনিধিদের কাছে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানালেও শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি।

হান্ডিয়াল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল করিম বলেন, এলাকাবাসীর স্বার্থে ওই স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণ খুবই জরুরি। ব্রিজ নির্মাণ হলে এলাকার পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর উন্নয়ন হবে। এই ব্রিজের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকট বার বার বলেছি, আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাইনি। বাঘলবাড়ী বাজার থেকে স্থল নলডাঙ্গা হয়ে চর এনায়েতপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পাকা রাস্তাসহ ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তিনি। চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সুলতান মাহমুদ জানান, স্থল নদী ঘাটে ব্রিজ প্রয়োজন বিষয়টি জানতে পারলাম। এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনে সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃৃপক্ষের কাছে প্রকল্প প্রস্তাবনা দেওয়া হবে।

×