ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

 বান্দরবানে পাহাড় কেটে সাবাড়

​​​​​​​নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান

প্রকাশিত: ২১:১৪, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

 বান্দরবানে পাহাড় কেটে সাবাড়

পাহাড় কেটে এভাবেই মাটি নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহল

পৃথিবীর লৌহদণ্ড বলা হয় পাহাড়কে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় যার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এর ওপর ভর করেই প্রকৃতি তার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। অথচ একশ্রেণির ভূমিদস্যু নিজেদের স্বার্থ হাসিলে বান্দরবানের সেই পাহাড়গুলোকে সাবাড় করছে। জেলা সদরের টংকাবতি ইউনিয়নে হাজার হাজার বৃক্ষ নিধন করে পাহাড় কেটে সাবাড় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে শমসু ইসলাম নামে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে।

জানা যায়, সদর উপজেলার টংকাবতি ইউনিয়নের দক্ষিণ হাঙ্গর এলাকায় শফিকুর রহমান পাড়া এলাকায় প্রায় ৪৫ একর পাহাড় কাটা হয়েছে। শ্রমিকরা এক্সকেভেটর দিয়ে গত মাস ধরে দিনে-রাতে সমানতালে একের পর এক পাহাড় কেটে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে তৈরি করেছে রাস্তা, লেক সমতল ভূমি। বিভিন্ন পাহাড়ের আরও কিছু অংশ কেটে সমান করার বাকি আছে মাত্র। সুয়ালক-চিম্বুক সড়কের নারিকেলের দোকানের দক্ষিণে সফিকুর রহমান পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে সুউচ্চ পাহাড় কেটে বেশ কয়েকটি রাস্তা তৈরি করেছেন। আরও একটু ভেতরে গেলেই দেখা মেলে পাহাড় আর বন নিধনের কর্মযজ্ঞ। আগেই কাটা হয়েছে একাশিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার বৃক্ষ। প্রায় ৪৫ একর উঁচু-নিচু সবুজ অরণ্য ঘেরা পাহাড় কেটে সড়ক বিভিন্ন প্রজেক্ট নির্মাণ করেছেন শমসু ইসলাম।

এই ব্যাপারে পাহাড় কাটার ঘটনায় অভিযুক্ত শমসু ইসলাম পাহাড় কাটার বিষয়ে কোনো ছাড়পত্র প্রতিবেদককে দেখাতে না পারলেও তিনি বলেন, আমি মাস ধরে অনুমতি নিয়ে পাহাড় কেটেছি, এখন পাহাড় কাটা শেষ। আরও জানা গেছে, স্থানীয় শমসু ইসলাম এলাকায় বেশ প্রভাবশালী, পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র না নিয়ে একের পর এক পাহাড় কেটে সাবাড় করেছে। জনশূন্য এলাকাটিতে কোনো বসবাস না থাকলেও পাহাড় মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিশাল সড়ক, আরও তৈরি করা হয়েছে বড় বড় বেশ কয়েকটি লেক, সেখানে গড়ে তোলা হবে খামার।

আরও জানা গেছে, পাহাড় কেটে সাবাড় করার পর অবৈধ পাহাড় কাটাকে বৈধ করতে তারা তোড়জোড় শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের নভেম্বর টংকাবতি ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নুর কবির স্বাক্ষরিত এক পত্রে দেখা যায়, এই সড়ক সংস্কারের জন্য  টংকাবতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাংয়ং (প্রদীপ) এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে জোর সুপারিশ করেন। তবে ব্যাপারে আবেদনকারী টংকাবতি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নুর কবির জানান, আমি কোনো আবেদন করিনি, বিশাল পাহাড়ি এলাকাটিতে হাজার হাজার গাছ থাকলেও তা পাহাড়সহ কেটে সড়ক লেক তৈরি করা হয়েছে। এই ব্যাপারে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সেখানে মৎস্য প্রজেক্টের অনুমতি নিয়েছে, কিন্তু পাহাড় কাটার অনুমতি নেই। আমরা কয়েকদিনের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই বিষয়ে মামলা করব।

×