ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু-১ আদালত বর্জন বহাল

আইনজীবীরা আদালতে ফিরলেও জটিলতা কাটেনি

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ০০:৪০, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আইনজীবীরা আদালতে ফিরলেও জটিলতা কাটেনি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী ও শিশু-১ আদালত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারী ও শিশু-১ আদালত ব্যতীত সব আদালতের ওপর থেকে বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। আজ মঙ্গলবার থেকে ওই একটি আদালত ব্যতীত সকল আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন আইনজীবীরা। দ্বিতীয়বারের মতো ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুরো আদালত বর্জনের ডাক দেওয়া হলেও ৬ দিনের মাথায় পুরো আদালত থেকে বর্জন প্রত্যাহার করে নেন আইনজীবীরা। তবে আইনজীবীদের নারী ও শিশু-১ আদালতের না যাওয়ার কর্মসূচি বহাল থাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আংশিক জটিলতা থেকে যাচ্ছে।
আইনজীবীদের দাবি পূরণে আইনমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার আশ^াসের প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে বিশেষ সাধারণ সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভুইয়া। তিনি জানান, আদালতের সমস্যা নিরসনে রবিবার আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, স্থানীয় সংসদ সদস্য র, আ, ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী আইন সচিব গোলাম সারোয়ারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।

সেখানে আমরা বলেছি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর মোহাম্মদ ফারুকের বিষয়ে কোনো ছাড় আইনজীবীরা দেবেন না। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জেলা জজ শারমিন নিগারের বিষয়ে আমাদের নমনীয় হতে বলেছেন। সেই আলোকে সাধারণ সভা শেষে নারী ও শিশু-১ আদালত ব্যতীত সব আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান বাবুল জানান, কোর্ট বন্ধকালীন সময়ে ৬শ’ হাজতি রয়েছে যাদের জামিন কাজ ব্যাহত হয়েছে। আইনজীবীরা সেই মানবিক দিক বিবেচনা করে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়। এদিকে জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, দীর্ঘদিন কোট বন্ধ থাকার কারণে প্রতিদিন ১৫শ’ মামলা করে অন্তত ৩০/৪০ হাজার মামলার জটলা সৃষ্টি হয়েছে। আইনজীবীরা আদালতে এলে বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ কমবে। আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার খবরে দুর্ভোগে থাকা বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সমিতির সভা করে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারীরা।
এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। একপর্যায়ে আইনমন্ত্রীর আশ্বাসে জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত বর্জন অব্যাহত রেখে বাকি সব আদালতের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া শুরু করে আইনজীবীরা।

তবে ৭ ফেব্রুয়ারি ৬ষ্ঠ দফায় বাড়ানো কর্মসূচির শেষ দিনেও তাদের অপসারণ না করায় আবারও সব আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয় আইনজীবীরা। তবে বুধবার আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের বদলির আদেশ হওয়ায় আইনজীবীদের মাঝে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

×