ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ে সারের কৃত্রিম সঙ্কট, চাষীরা হতাশ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ২৩:৫১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঠাকুরগাঁওয়ে সারের কৃত্রিম সঙ্কট, চাষীরা হতাশ

বাজারে সার সঙ্কট

জেলায় এবার তুলনামূলক আমন মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে ধান রোপণ করায় এমনিতেই কৃষকদের চাষাবাদের খরচ বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে সার সঙ্কটের অজুহাতে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও বেশি দামে এমওপি, টিএসপি, ডিএপি সার ক্রয় করায় চলতি আমন মৌসুমে ধানের উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের। সদর উপজেলার আব্দুল খালেক নামের কৃষক বলেন, ‘৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা পটাশ (এমওপি) সার খুচরা বাজারে কিনতে গেলে এক হাজার আটশ’ ও ইউরিয়া এক হাজার চারশ’ টাকা নিচ্ছে। তাও আবার প্রথম ধাপে সার পেলেও এখন বেশি দামেও সার পাচ্ছি না।
কৃষক ইউসুফ আলী ও আল আমীন বলেন, ‘সারের অভাবে ধানের গাছের চেহারা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আর কিছুদিন গেলেই আবার আলু লাগাতে হবে। আলুতে তো আরও বেশি সার লাগবে বিশেষ করে পটাশ, ইউরিয়া ও টিএসপি সার। কিন্তু পটাশ ও টিএসপি সার তো এখনই পাওয়া যাচ্ছে না। এভাবে সার না পেলে চাষাবাদ বন্ধ করে দিতে হবে। জ্বালানি তেলসহ সারের দাম অতিরিক্ত বেড়েছে। এত বেশি টাকা খরচ করে কৃষি কিভাবে করব। আমরা কৃষকরা কাকে কি বলব। আমাদের কথা কে শুনবে!
ডিলাররা বলছেন, সরকারের নির্ধারিত দামেই তারা সার বিক্রয় করছেন ও স্থানীয় কিছু খুচরা ক্রেতারা ডিলাদের কাছে সার না পেয়ে বিক্রয় বন্ধ রেখেছেন। ফলে কৃষকদের সার দিতে পারছেন না বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) শিবগঞ্জ ঠাকুরগাঁও বাফারগুদাম কার্যালয়ের তথ্য মতে, জেলায় বিসিআইসির মোট ৬৩ জন সারের ডিলার রয়েছে। বর্তমানে এই গুদামে ইউরিয়া সারের মজুদ আছে সাড়ে ৫ হাজার টন। চলতি বছরের চলতি সেপ্টেম্বর মাসে বরাদ্দকৃত ইউরিয়া সার ৩ হাজার ৭২৪ টনের মধ্যে ৩ হাজার ১০০ টন সার বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ বিএডিসির উপ-সহকারী পরিচালক (সার) কার্যালয়ের সূত্র মতে, জেলায় বিএডিসির সার ডিলার মোট ১৪৯ জন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ৯৬৭ টন টিএসপি ও এক হাজার ৪৬ টন ডিএপি বরাদ্দকৃত সারের মধ্যে টিএসপি মজুদ আছে ৩৪১ দশমিক ৪৫ ও ডিএপি ৫৯১ দশমিক ৫ টন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ জানান, পরিবহনের জন্য এমওপি সার সময় মতো আসতে না পারায় কিছুটা সঙ্কট দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এখন এমওপিসহ সকল প্রকার সার পর্যাপ্ত পরিমাণ মজুদ আছে বলে জানান তিনি।
এদিকে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক সারের বাজার মনিটরিং করছেন উল্লেখসহ সার বেশি দামের বিক্রয়ের কোন সুযোগ নেই দাবি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা ড. আব্দুল আজিজ আরও জানান, জেলায় সবজি ও আলু চাষের জন্যও পর্যাপ্ত পরিমাণে সার মজুদ আছে। তাই কৃষকদের অধৈর্য না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

×