ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ

আজ বাংলাদেশ-ভারত প্রথম ওয়ানডে

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:৫০, ৪ ডিসেম্বর ২০২২; আপডেট: ০৯:২৩, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

আজ বাংলাদেশ-ভারত প্রথম ওয়ানডে

সিরিজের ট্রফি হাতে দুই অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও লিটন দাস

সাড়ে ৭ বছর আগে বাংলাদেশ সফরে এসে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় ভারত। সেবার মহেন্দ্র সিং ধোনীর নেতৃত্বে খেলেছেন রোহিত শর্মা। এই দীর্ঘ সময় পর আবার স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে রোহিতের নেতৃত্বে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামবে ভারত। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে দুপুর ১২টায় শুরু হবে। এই সিরিজটি বিশ^কাপ ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ না হলেও দুই দেশে মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে ময়দানী ক্রিকেটে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা উত্তেজনা এবং সমর্থকদের মধ্যে উন্মাদনা সেজন্য বাড়তি আগ্রহের সৃষ্টি করছে।

সেই বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে এই জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা, স্থায়ুচাপ এবং তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ^কাপ থেকেই। এরপর অধিকাংশ ম্যাচেই ভারত জিতেছে ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশ দল তাদের ফেলেছে চ্যালেঞ্জের মুখে। তাই রোহিত প্রথম ম্যাচের আগে দলকে বার্তা দিয়েছেন স্বাগতিকদের বিপক্ষে জিততে হলে নিজেদের সেরাটা দিয়েই খেলতে হবে। এই সিরিজে অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু হচ্ছে লিটন কুমার দাসের। তবে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার উত্তেজনা বাদ দিয়ে তার মূল লক্ষ্য সিরিজ জেতা।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ জানানো বাংলাদেশী ব্যাটার লিটন কুমার দাস। সর্বশেষ টি২০ বিশ^কাপেও ভারতীয়দের চাপে ফেলেন তিনি মাত্র ২৭ বলে ৭ চার, ২ ছয়ে ৬০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস উপহার দিয়ে। ২০১৫ সালে ভারতের বিপক্ষেই অভিষেক হয় লিটনের। সেই সিরিজের ৩ ম্যাচে অবশ্য তেমন সুবিধা করতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে ১৩ বলে ৮, দ্বিতীয় ম্যাচে ৪১ বলে ৩৬ এবং তৃতীয় ম্যাচে ৫০ বলে ৩৪ রান করেন। ভারতের বিপক্ষে ৬ ওয়ানডে খেলে তিনি ১ সেঞ্চুরিতে ৩৮.০ গড়ে ২২৮ রান করেছেন তিনি।

২০১৮ সালের এশিয়া কাপ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১১৭ বলে ১২ চার, ২ ছয়ে ১২১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন লিটন। তার এই বিধ্বংসী মনোভাবই ভারতের বিপক্ষে বড় শক্তি ওয়ানডে সিরিজে। কারণ অভিজ্ঞ বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন। তাই বাংলাদেশ দলকে প্রথমবার ওয়ানডে সিরিজে নেতৃত্ব দেবেন লিটন। ২৮ বছর বয়সী ডানহাতি ওপেনার লিটন অবশ্য গত বছর অকল্যান্ডে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক টি২০ ম্যাচে নেতৃত্ব দেন। সে কারণে নেতৃত্ব বড় চাপ হবে না তার জন্য।

তাছাড়া লিটন নিজেই বলেছেন, ‘আমি যখন দায়িত্ব পেলাম, আমার হাতে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ৩ জন সিনিয়র খেলোয়াড় আছে, এটা ভেবে অনেক ভালো লাগছে। অবশ্যই আমি চাইব তারা মাঠে আমাকে সহায়তা করবে। প্রথমবার এত বড় সিরিজে দায়িত্ব পেলাম। আমি আশাবাদী, বড় ভাইরা আমাকে সহায়তা করবে। তাদের কাছে যে কোনো সময় সহযোগিতা পাব।’ সতীর্থদের কাছ থেকেও যথেষ্ট ফিডব্যাক আশা করছেন লিটন।
সর্বশেষ গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ দল। মাঝে দীর্ঘ সময় টি২০ ফরম্যাটে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। এবার ফরম্যাট বদলে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে খেলতে হবে। কিন্তু ওয়ানডে ফরম্যাটে দুর্দান্ত বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই পরের বিশ^কাপে সরাসরি খেলা নিশ্চিত করেছে। ঘরের মাঠে আরও দুর্দান্ত ও বিধ্বংসী তারা। এর প্রমাণ অতীতে পেয়েছে ভারতও। অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান আছেন দলে।

যদিও তামিমকে পুরো সিরিজে এবং প্রথম ওয়ানডেতে তাসকিন আহমেদ খেলবেন না। তাদের ছাড়াই শুরুটা কেমন করবে বাংলাদেশ? লিটন বলেছেন, ‘লক্ষ্য একটাই- জেতার জন্যই খেলতে নামব। ওদের সঙ্গে লড়াই করা পুরোপুরি সম্ভব। আমাদের তিন বিভাগই ভালো আছে। তাদের ব্যাটিং লাইনআপ খুবই ভালো। শুধু কোহলি না, রোহিত, ধাওয়ান, রাহুল- আমাদের বোলারদের নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। হোমে মূল লক্ষ্য সিরিজ জেতা। এটাই মূল লক্ষ্য থাকবে। এই সিরিজ নিয়ে প্রত্যেক খেলোয়াড় অনেক আশাবাদী।’ এর আগে ৩৬ ওয়ানডেতে ভারতের মুখোমুখি হয়ে ৫ বার জিতেছে বাংলাদেশ।

জয় সংখ্যা কম হলেও কয়েক বছর ধরে ভারতের সঙ্গে প্রায় সব ম্যাচেই সমানে-সমান লড়েছে টাইগাররা। খুব কাছাকাছি গিয়ে হেরেছে অনেকগুলো ম্যাচ। আর তাই ঘরের মাঠে আরো আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে সচেতন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত বলেছেন, ‘৭-৮ বছর ধরে তারা আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জে ফেলেছে। তাদের বিপক্ষে সহজে জেতা সম্ভব হবে না। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েই জিততে হবে। তবে আমরা এখানে সিরিজ জেতা ব্যতীত অন্য কিছু ভাবছি না।’ ভারতের ব্যাটিং লাইনে আছে এক ঝাঁক বিশ্ব কাঁপানো ব্যাটার।

সুপার স্টার বিরাট কোহলি সবসময়ই বাংলাদেশের বিপক্ষে দুর্দান্ত। তাই বাংলাদেশী বোলারদের বেশ চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে। কিন্তু খেলা মিরপুরের উইকেটে বলেই আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে বাংলাদেশের। কারণ অকুণ্ঠ সমর্থন আছে নিজেদের পক্ষে এবং সেই সঙ্গে উইকেটের গতি-প্রকৃতি ভারতীয়দের চেয়ে বেশি জানা টাইগারদের। সেজন্যই লিটন এটিকে ভারতের বিপক্ষে সফল হওয়ার ক্ষেত্রে ‘প্লাস পয়েন্ট’ হিসেবে দেখেছেন।

×