মাহমুদুল্লাহ
ফেরিতে করে সেন্ট লুসিয়া হতে ডোমিনিকা যাত্রায় ভয়াল অভিজ্ঞতার পর একটা দিনও অনুশীলন করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। এর আগেই শনিবার রাতে নামতে হয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচে। তবে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মনে করছেন মানসিক প্রস্তুতিটাই ক্রিকেটে আসল এবং ডোমিনিকা আসার আগে সেন্ট লুসিয়ায় দল সুযোগ পেয়েছে অনুশীলনের। তাই খুব বেশি সমস্যা দেখছেন না তিনি। এবার ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে নেই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। তার জায়গায় অন্য কারও ভাল করে দলে থিতু হওয়ার ভাল সুযোগ দেখছেন মাহমুদুল্লাহ। এই সিরিজ দিয়েই মূলত আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের। তাই এখন থেকেই তরুণদের বেশি বেশি সুযোগ দেয়ার পক্ষে তিনি। প্রথম ম্যাচে উইন্ডিজের মুখোমুখি হওয়ার আগে এসব কথা বলেন মাহমুদুল্লাহ।
টি২০ ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত নিজেদের সেভাবে থিতু করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্বলতাটা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ মনে করেন ঘরের মাঠে বেশ ধারাবাহিক বাংলাদেশ। তিনি মনে করেন দেশের বাইরে অনেক উন্নতি করতে হবে। সেজন্য তরুণদের বেশি বেশি সুযোগ দেয়ার পক্ষে তিনি। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘হোম কন্ডিশনে আমরা অনেক বেশি ধারাবাহিক। এ্যাওয়ে ম্যাচে উন্নতির ঘাটতি এখনও আছে। এখানে আরও ভাল হতে হবে, এটা আমি স্বীকার করি। কয়েকজন খেলোয়াড় আছে যারা এখনও তরুণ, অনভিজ্ঞ। ওদের সময় দিতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আমরা আরও ১০-১২টি ম্যাচ খেলব। ওরা যেন যথেষ্ট সুযোগ পায়। ওরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ওদের জন্যও ভাল, দলের জন্যও ভাল।’ আড়াই বছর হতে চললো অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল এই ফরমেটে খেলছেন না। এবার দলে নেই মুশফিকও। অভিজ্ঞদের ঘাটতি পূরণের বিষয়ে মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘মুশফিক আমাদের অভিজ্ঞ ক্যাম্পেনার। তবে এটা ওর জায়গা পূরণ করার ভাল একটা সুযোগ। তার জায়গায় যে-ই সুযোগ পাবে তার জন্য এটা অনেক ভাল সুযোগ।’ দল হিসেবেও এবার সিরিজ জয়ের সুযোগ দেখছেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘আসলে দল হিসেবেই আমাদের জন্য এটা সিরিজ জয়ের সুযোগ, বাংলাদেশের জন্য জেতার সুযোগ।’
এই সিরিজে দলের সঙ্গে তামিম-মুশফিকরা না থাকলেও ব্যাটিং নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না মাহমুদুল্লাহ। কারণ এখনও যথেষ্ট ব্যাটিং গভীরতা আছে এবং বিকল্পও আছে। তিনি বলেন, ‘সাকিব, লিটন আছে, আমি আছি। আফিফ, সোহান, মোসাদ্দেক আছে। শেখ মেহেদী আছে। আমি মনে করি ব্যাটিংয়ের গভীরতা ভাল। আমাদের বোলিং আক্রমণও খুব ভাল, বৈচিত্র্য আছে। আশা করি অনেক চ্যালেঞ্জিং সিরিজ হবে।’ টি২০ ক্রিকেটে দ্রুত রান করার তাগিদ থাকে। সেজন্য শুরুর ৬ ওভারের পাওয়ার প্লে উপযুক্তভাবে ব্যবহার করা জরুরী। আর এখানেই আছে বাংলাদেশের দুর্বলতা। তবে তরুন মুনিম শাহরিয়ার আর দীর্ঘ সময় পর দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়ের ওপর ভরসা করছে বাংলাদেশ। জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার এ বিষয়ে বলেছেন, ‘মুনিম তো শুরু করেছে। বিজয়ও আছে। মুনিম হয়ত ওপেন করবে সঙ্গে হয়তো বিজয় থাকবে। নতুন ওপেনিং জুটি। তবে দুজনই অনেক এক্সাইটিং ক্রিকেট খেলে থাকে। এবার টি২০তে একটু ভিন্নভাবে খেলতে চাচ্ছি। এটা টিম ম্যানেজমেন্টেরও চাওয়া যে পাওয়ার প্লে’র ভাল ব্যবহার। গত ম্যাচগুলোতে পাওয়ার প্লে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে পারিনি।
আশা করছি নতুন দুই ওপেনার প্রথম ৬ ওভার ভালভাবে ব্যবহার করতে পারবে। সে উদ্দেশ্যেই এই দুজনকে দলে নেয়া।’ তবে বাড়তি চাপ দিতে নারাজ তিনি এ দুজনের ওপর। কারণ সেক্ষেত্রে হিতে-বিপরীত হতে পারে। হাবিবুল বলেন, ‘তাদের ওপর চাপ দিচ্ছি না। আমরা চাইব যেন স্বাভাবিক খেলা খেলে। আশা করছি পাওয়ার প্লে কাজে লাগাবে। সেটা করতে গিয়ে ব্যর্থ হলেও আমরা কিছু মনে করব না। আমরা সেই মানসিকতা, সেই ক্রিকেট চাই।’