ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডোকে অভিনন্দন, মেসির সিদ্ধান্ত সঠিক

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০

রোনাল্ডোকে অভিনন্দন, মেসির সিদ্ধান্ত সঠিক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পর্তুগাল অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো ৮ সেপ্টেম্বর অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েছেন। ইতিহাসের মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১০০ গোলের অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। নিশ্চিত করেই বলা যায়, মাসকয়েকের মধ্যে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়ে যাবেন সিআর সেভেন। বর্তমানে খেলা চালিয়ে যাওয়া ফুটবলারদের কারও ১০০ গোল দূরে থাক, কাছাকাছিও নেই। রোনাল্ডোর পরের পজিশনে থাকা ভারতের সুনীল ছেত্রীর গোল ৭২। এরও পরে আছেন লিওনেল মেসি, যার গোল ৭০। রোনাল্ডোর কীর্তিটা তাই অনন্য, অসামান্য এটা সবাই অনুধাবন করতে পারছেন। তাই তো সুদর্শন এই সুপারস্টারকে প্রশংসায় ভাসিয়ে চলেছেন শত্রুমিত্র সবাই। এবার এই তালিকায় যোগ দিয়েছেন বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্টিনো। এক বার্তায় তিনি রোনাল্ডোকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এটা অনন্য অর্জন। এ কারণে ক্রিস্টিয়ানোকে অভিনন্দন। আশাকরি সে তার সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখবে। সে বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। আশাকরি সামনা সামনিই অভিনন্দন জানাতে পারব। শুভকামনা সবসময়ের। ফিফা বস কথা বলেছেন মেসিকে নিয়েও। গত ২৫ আগস্ট প্রাণের ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে বিশ্ব ফুটবলে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। কিন্তু ট্রান্সফার জটিলতায় শেষ পর্যন্ত ন্যুক্যাম্প ছাড়তে পারেননি। মেসির বার্সায় থেকে যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন ইনফান্টিনো। তিনি বলেন, মেসি দুর্দান্ত এক খেলোয়াড়। খেলোয়াড়ের চেয়েও বেশি কিছু। সে অনেক অনেক বড় একজন কিংবদন্তি এবং বার্সিলোনা তার ক্লাব। আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত দুইপক্ষ এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যাতে তারা সন্তুষ্ট। এখন ভবিষ্যতে কি হয় সেটাই দেখার। সঙ্কট কাটিয়ে এর আগে বার্সার ব্যক্তিগত অনুশীলনে ফিরেছিলেন মেসি। এবার দ্বিতীয় দফায় করোনা নেগেটিভ হওয়ায় পর বুধবার থেকে বার্সার দলীয় অনুশীলনেও যোগ দিয়েছেন। ক্লাব ছাড়তে ব্যর্থ হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো তিনি পুরো দলের সঙ্গে অনুশীলনে নেমেছেন। ৩৩ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন তারকা স্প্যানিশ লা লিগার করোনাভাইরাস প্রোটোকল অনুযায়ী সোম ও মঙ্গলবার একাই অনুশীলন করেছেন। এরপর বুধবার থেকে নতুন কোচ রোনাল্ড কোম্যানের অধীনে পুরো দলের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ অনুশীলন করেছেন। ক্লাবের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে মেসি ছাড়াও মূল দলে ফিরেছেন ফিলিপ কুটিনহো, সার্জিও বসকুয়েটস, ফ্রেঙ্কি ডি জং ও আনসু ফাতি। শনিবার তৃতীয় বিভাগের দল জিমন্যাস্টিক টারাগোনার বিরুদ্ধে প্রাক-মৌসুম প্রীতি ম্যাচে মেসিকে মাঠে দেখা যেতে পারে। তবে এর চারদিন পর জিরোনার বিরুদ্ধে ছয়বারের ফিফা সেরা তারকার মাঠে ফেরা প্রায় নিশ্চিত। গত মাসে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে বেয়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর এই প্রথম মেসি বার্সিলোনার জার্সি গায়ে মাঠে নামতে যাচ্ছেন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ভিয়ারিয়ালের বিরুদ্ধে লা লিগার নতুন মৌসুম শুরু করবে বার্সা। আসছে মৌসুমে দলকে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনতে নতুন কৌশল অবলম্বন করতে চলেছেন কাতালানদের নয়া কোচ রোনাল্ড কোম্যান। আর তাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে মেসিরই। জানা গেছে, মেসিকে ‘ফলস রাইট উইঙ্গার’ হিসেবে খেলাবেন কোম্যান। যেখানে আক্রমণভাগে মুক্তভাবে ঘুরতে পারেন তিনি। এতে মাঝমাঠে বলের পেছনে ছুটাছুটি করতে হবে না তাকে। বরং তার সতীর্থরাই তাকে বলের যোগান দেবেন। মেসিকে ডিফেন্সে দৌড়ানো থেকেও মুক্ত রাখা হবে। ফলে আরও বেশি গোল করার দিকে নজর দিতে পারবেন তিনি। মেসিকে ডিফেন্সে নজর দেয়া থেকে মুক্ত রাখতে বার্সার ডান এবং প্রতিপক্ষের বাঁদিকে একজন সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারকে দায়িত্ব দেবেন কোম্যান। এই দায়িত্বটা সম্ভবত ক্লাবের সম্ভাব্য নতুন যুক্ত হতে যাওয়া এরিক গার্সিয়ার কাঁধেই বর্তাবে। আর মাঠে বার্সার বাঁদিকটা সামাল দেয়ার দায়িত্ব পড়তে পারে উসমান ডেম্বেলে কিংবা আনসু ফাতির ওপর। এদিকে ‘মাঠের নায়ক’ মেসি মাঠের বাইরেও মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘লিও মেসি ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে আরও একবার দাতব্য কাজে জড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি দৃষ্টিশক্তিহীন ও ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য একটি ক্যাম্পেইনে যুক্ত হয়েছেন মেসি। এ জন্য ‘ওরক্যাম’ নামের দৃষ্টি সহায়ক যন্ত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তিহীন ও ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন শিশুদের জন্য আধুনিক দৃষ্টিসহায়ক যন্ত্র উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বার্সা অধিনায়ক। কয়েক হাজার ইউরো মূল্যের ‘ওরক্যাম মাইআই’ নামের এই যন্ত্র আগামী কয়েক বছর ধরেই উপহার হিসেবে দিয়ে যাবেন মেসি। এই প্রকল্পের প্রচারণার অংশ হিসেবে সম্প্রতি ১০ বছর বয়সী আর্সেনালভক্ত শিশুকে একটি দৃষ্টিসহায়ক যন্ত্র উপহার দিয়েছেন ক্ষুদে জাদুকর।
×