ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

বায়ার্নের উৎসবের মধ্যমণি হ্যারি কেইন-টমাস মুলার

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ১২ মে ২০২৫

বায়ার্নের উৎসবের মধ্যমণি হ্যারি কেইন-টমাস মুলার

ট্রফি নিয়ে হ্যারি কেইনের উচ্ছ্বাস (বাঁয়ে) ও মিউনিখে দর্শকদের বিদায়ী ভালোবাসার জবাব দিচ্ছেন টমাস মুলার

জার্মান বুন্দেসলিগায় বায়ার্ন মিউনিখের শিরোপা আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। অপেক্ষা ছিল কেবল উৎসবের। সেটা যে আনন্দের এতসব অনুষঙ্গ নিয়ে হাজির হবে ‘দ্য বাভারিয়ানস শিবিরও’ হয়ত ভাবেনি। পরশু মিউনিখের অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় বরুশিয়া মনশেনগ্লাডব্যাচকে ২-০ গোলে হারানোর পর শুরু হয় জার্মান জায়ান্টদের ট্রফি উল্লাস।

আর সেটির কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন টমাস মুলারÑযার জন্য এটাই ছিল বায়ার্নের হয়ে ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ম্যানুয়েল নিউয়ের ট্রফি তুলে দেন কিংবদন্তি মুলারের হাতে। তিনিই প্রথম উঁচিয়ে ধরেন ‘সালাদ বোল’ নামে পরিচিত শিরোপা। ট্রফি নিয়ে পরিবারসহ আনন্দ করেন হ্যারি কেনও। 
২০০০ সালে মাত্র ১০ বছর বয়সে টিএসভি প্যাহল থেকে বায়ার্নের যুব দলে নাম লেখান মুলার। হ্যারি কেইনের কথাও আলাদা করে না বললেই নয়। দীর্ঘ পনেরো বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে ইপিএল, ইউরোপ ঘুরে ৬ ফাইনাল আর ৬৯৪ ম্যাচ পর প্রথম শিরোপার স্বাদ পেয়েছেন ইংলিশ তারকা স্ট্রাইকার। প্রথমার্ধের ৩১ মিনিটে দারুণ এক গোলে বায়ার্নকে এগিয়ে দেন হ্যারি কেইন।  যা এবারের লিগে তার ২৫তম গোল।

দ্বিতীয়ার্ধের একেবারে শেষদিকে, ৯০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি করেন মাইকেল অলিসে, যিনি কেইনের গোলে অ্যাসিস্টও করেন। ক্যারিয়ারে বহুবার শিরোপার দোরগোড়ায় গিয়ে ব্যর্থ হওয়া ইংলিশ অধিনায়ক কেইন ৩১ বছর বয়সে এসে অবশেষে পেলেন কাক্সিক্ষত স্বাদ। ১৩ বছর ছিলেন টটেনহামে এবং ইংল্যান্ডের হয়ে খেলছেন ১০ বছর ধরে। এর মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হিসেবেও। কারও কারও কাছে হ্যারি কেইন এবং গোল করাও হয়ে উঠেছে সমার্থক।

কিন্তু এত কিছুর পরও কেইনের ক্যারিয়ার যেন ছিল হাহাকারের গল্প। সবকিছু করেও যে নামের পাশে ছিল না কোনো শিরোপা। সেই শিরোপা খরা কাটাতে কেইন যান বায়ার্ন মিউনিখে। দুই মৌসুম আগে। অন্যদিকে ৩৫ বছর বয়সী মুলারের এটি ছিল নিজের ৫০২তম বুন্দেসলিগা ম্যাচ, মাঠ ছেড়েছেন ৮৪তম মিনিটে।

সে সময় সতীর্থদের আলিঙ্গন, গ্যালারির উচ্ছ্বাস, বিদায় জানিয়ে চুমু ছুড়ে দিয়েছেন ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড়। মাঠের পাশে ফুল ও একটি বিশেষ ছবিও উপহার পেয়েছেন তিনি- যেখানে আঁকা তার জেতা সব ট্রফির স্মৃতি। ম্যাচ শুরুর আগে গ্যালারির একাংশে দেখা যায় বিশাল লাল-সাদা টিফো, যেখানে মুলারের ট্রফি উঁচিয়ে ধরা ছবি ও তার নাম বিশাল অক্ষরে লেখা ছিল, ‘২৫ বছর ধরে আমাদের রঙের জন্য সবকিছু!’ এমন ভালোবাসার মাঝে ক্লাব অফিসিয়ালরাও মুলারকে সম্মান জানান।
২০০০ সালে মাত্র ১০ বছর বয়সে টিএসভি প্যাহল থেকে বায়ার্নের যুব দলে নাম লেখান মুলার। ২০০৮ সালে ক্লিন্সমানের অধীনে অভিষেক, এর পর লুই ফন হালের অধীনে ২০০৯-১০ মৌসুমে স্থায়ী হন মূল দলে। এর পর তো শুধু ইতিহাস। ৭০০-এর বেশি ম্যাচে অংশ নিয়ে ২০০-এর বেশি গোল ও ২০০-এর বেশি অ্যাসিস্ট করেছেন। জিতেছেন রেকর্ড ১৩টি বুন্দেসলিগা শিরোপা।

বায়ার্ন গত এপ্রিলেই জানিয়েছিল, এবারই ক্লাবটির সঙ্গে শেষ মৌসুম কাটাচ্ছেন মুলার। যদিও তিনি থাকতে চেয়েছিলেন আরও, কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার উচ্চ বেতনের কারণে নতুন চুক্তি না করার সিদ্ধান্ত নেয়। উল্লেখ্য, আগের সপ্তাহেই বায়ার্ন তাদের রেকর্ড-বর্ধিত ৩৪তম বুন্দেসলিগা শিরোপা নিশ্চিত করে।

×