
বিশ্বজুড়ে বিটকয়েন মাইনিং শিল্প দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে, আর সেই দৌড়ে রাশিয়া খুব শিগগিরই দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারে এমন পূর্বাভাস দিয়েছেন জিআইএস মাইনিংয়ের প্রধান নির্বাহী ভাসিলি গিরিয়া। তাঁর মতে, সাম্প্রতিক কিছু বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও নতুন ও বড় অর্থনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর আগমনে রাশিয়ার মাইনিং খাত আরও গতিশীল হয়ে উঠছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে এক আলোচনায় গিরিয়া জানান, আগামী তিন বছরের মধ্যে রাশিয়ার বিটকয়েন মাইনিং খাতের উৎপাদনক্ষমতা ৭ গিগাওয়াটে উন্নীত হতে পারে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এতেই রাশিয়া দৃঢ়ভাবে দ্বিতীয় অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতাও আরও তীব্র হবে।
এই উন্নয়নের পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। প্রথমত, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বড় বড় বিনিয়োগকারী গোষ্ঠী এখন বিটকয়েন খাতে সক্রিয়ভাবে প্রবেশ করছে। দ্বিতীয়ত, রাশিয়ায় ক্রিপ্টো লেনদেনকে ধাপে ধাপে বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ব্যাংকগুলোকে ক্রিপ্টোকারেন্সিভিত্তিক বিনিয়োগ সেবা চালুর অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর ফলে মূলধারার আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে ক্রিপ্টো খাতের সংযুক্তি বাড়ছে।
গিরিয়া আরও বলেন, বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ১৩টি অঞ্চলে মৌসুমি বিদ্যুৎ ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। তবে তিনি মনে করেন, বেসরকারি মালিকানাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রভিত্তিক মাইনিং স্থাপনাগুলো গড়ে তোলা হলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। এতে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎগ্রিডের ওপর চাপ কমবে এবং মাইনিং কার্যক্রমও বিঘ্নিত হবে না।
রাশিয়ার তুলনামূলক ঠান্ডা আবহাওয়া এবং সরকারি বিদ্যুতের নিম্নমূল্য মাইনিংয়ের জন্য যে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে, সেটাও গিরিয়ার দৃষ্টিতে বড় একটি সুবিধা। এই প্রসঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কয়েক বছর আগেকার একটি মন্তব্য স্মরণ করিয়ে দেন তিনি, যেখানে পুতিন বলেছিলেন দেশে বিদ্যুতের অতিরিক্ত সরবরাহ রয়েছে এবং দক্ষ জনবল সহজলভ্য। এই দুই উপাদানই মাইনিং শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।
সব মিলিয়ে রাশিয়ার বিটকয়েন মাইনিং খাত এখন একটি মোড় ঘোরানোর সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে সরকারি পর্যায়ে ক্রিপ্টো নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, অন্যদিকে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তির প্রসার সব মিলিয়ে আগামী দিনে এই খাত রাশিয়ার জন্য একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। আর এই গতি বজায় থাকলে রাশিয়ার বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম মাইনিং শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়া এখন আর খুব দূরের ব্যাপার নয়।
সূত্র:https://tinyurl.com/ys5zcd3m
আফরোজা