
.
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘জুলাইয়ের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জুলাইয়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত এবং বিচার কাজের জন্য। এই ট্রাইব্যুনাল সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই এবং তার নিজস্ব গতিতে চলছে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এই বিচার প্রক্রিয়া কোনো বিলম্ব ছাড়াই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আমি এই দায়িত্বে অটল থাকব।’ রবিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা এবং দক্ষতা-বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বক্তব্য রাখেন। স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তবর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই বিপ্লব নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তবর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ আমরা সামনে জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর উদযাপন করব। আমাদের তরুণরা রক্তের বিনিময়ে তাদের প্রত্যাশা জানিয়েছে এবং আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। এসব কিছুই সম্ভব যদি শুরুটা সঠিকভাবে করা হয়। জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের সেই সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ আর কখনো আসবে না। এই সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত হবে না। ’ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ একটা জটিল পরিস্থিতির মধ্যে আছে। হাজারো মানুষের ত্যাগের মধ্য দিয়ে হওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রমাণ। এই জাগরণ এসেছিল হাজারো মানুষের প্রাণের বিনিময়ে, যেখানে আরও কয়েক হাজার হতাহত হয়েছে। এখন আমরা যারা বেঁচে আছি, তাদের ওপর কিছু দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে। এই দায়ভার শেষ তখনই হবে, যখন জুলাইয়ের মানবতাবিরোধী অপরাধের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’ তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের মনে রাখতে হবে জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদলের জন্য হয়নি। গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত যে গভীর আধিপত্য ও পক্ষপাতিত্ব রয়ে গেছে, তা ভেঙে ফেলার তীব্র আকাক্সক্ষার মধ্য দিয়ে এটি ইন্ধন পেয়েছিল। বিপ্লবের প্রতি আমাদের লক্ষ্য আমাদের সব কর্মের দ্বারা পরিচালিত একটি ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, সাম্য ও মর্যাদা সৃষ্টি করা। এই অভ্যুত্থান পুরানো শৃঙ্খলা ভেঙে এমন একটি রাষ্ট্রকে উন্মোচিত করতে চেয়েছিল, যাতে কোনো একক দল কখনো মরিয়া বা কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে না পারে।
প্যানেল