
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত একটি ঐতিহাসিক জাতি হচ্ছে ইহুদি জাতি, যাদেরকে এক সময় মহান আল্লাহ শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে মনোনীত করেছিলেন। কিন্তু অহংকার, অবাধ্যতা এবং অপরাধপ্রবণতার কারণে তারা আল্লাহর ক্রোধের শিকার হয় এবং পরিণত হয় পৃথিবীর অন্যতম নিপীড়িত জাতিতে।
মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বনী ইসরাইলের প্রতি অসংখ্য অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “হে বনী ইসরাইল! স্মরণ করো সেই অনুগ্রহের কথা, যা আমি তোমাদেরকে দান করেছিলাম এবং পৃথিবীর উপরে তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছিলাম।”
তবুও এই জাতি এমন এক অভিশপ্ত রূপ ধারণ করে, যারা বহু নবীকে হত্যা করেছে। তারা শুধু নবীদের অস্বীকার করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে বনী ইসরাইল কর্তৃক নবীদের হত্যার ঘটনা বারবার উঠে এসেছে। একটি আয়াতে বলা হয়েছে, “তাদের উপর লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্য চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তারা আল্লাহর ক্রোধের শিকার হয়েছে। তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে এবং নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে।”
আরও বলা হয়েছে, “তোমাদের মনোপূত নয় এমন বার্তা নিয়ে যখনই কোনো রাসূল এসেছে, তখন তোমরা তাকে অস্বীকার করেছ, এমনকি কিছু রাসূলকে হত্যা করেছ।”
যদিও কোরআন বা হাদীসে ঠিক কতজন নবীকে তারা হত্যা করেছে সে সংখ্যা স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই, তবে বিশুদ্ধ ইসলামি ইতিহাস ও তাফসীর গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ইহুদিরা শতাধিক নবীকে হত্যা করেছে। হাদীসের একটি বর্ণনায় সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছেন, বনী ইসরাইল ৩০০ জন নবীকে হত্যা করেছে।
প্রখ্যাত তাফসীরবিদ আল্লামা কাজী নাসিরউদ্দিন বাইজাবী (রহ.) তাঁর তাফসীরে উল্লেখ করেছেন, বনী ইসরাইলের হাতে যারা হত্যার শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন হযরত আশিয়া (আ.), হযরত জাকারিয়া (আ.) এবং তাঁর পুত্র হযরত ইয়াহিয়া (আ.)। তারা হযরত ঈসা (আ.)-কেও হত্যার চেষ্টা করেছিল এবং বিশ্বাস করত তারা তাকে হত্যা করতে পেরেছে। কিন্তু মহান আল্লাহ কোরআনে ঘোষণা করেছেন, “তারা ঈসা (আ.)-কে হত্যা করেনি, শুলেও চড়ায়নি। বরং তারা বিভ্রান্ত হয়েছিল।”
এমনকি তারা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও হত্যার ষড়যন্ত্র চালিয়ে গেছে তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।
এই জঘন্য অপরাধের কারণে আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাইলের প্রতি কঠোর শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করে, অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করে এবং ন্যায়ের কথা বলা মানুষদের খুন করে, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি।”
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/CJ71IHDdcm8?si=EgPhQzW3pqAMm25y
এম.কে.