
ছবি: সংগৃহীত
ভয়াবহ ফ্ল্যাশ ফ্লাডে সোয়াত নদীতে অন্তত ১৮ জন পর্যটক ভেসে গেছেন বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা। এদের মধ্যে ১০ জন একই পরিবারের সদস্য। শুক্রবার (২৭ জুন) এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং তিনজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখনো ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দুঃখভারাক্রান্ত কণ্ঠে নিজের পরিবারের ট্র্যাজেডির বিবরণ দিয়েছেন দাসকা থেকে আসা পর্যটক আদনান। তিনি বলেন, "আমার পরিবারের চারজন নারী ও ছয়জন শিশু ভেসে গেছে। আমাদের সঙ্গে আরও তিনজন ডুবে গেছেন। আমরা সকালের নাস্তা করছিলাম নদীর পাড়ে, হঠাৎ ঢেউ এসে কোন সময়ই দিল না পালানোর।"
রেস্কিউ ১১২২–এর মহাপরিচালক শাহ ফাহাদ জানান, ৮০ জনের একটি উদ্ধারকারী দল বর্তমানে সোয়াত নদীর পাঁচটি পৃথক স্থানে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। নদীর পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে বেশি থাকায় উদ্ধারকাজে বিলম্ব হচ্ছে।
এদিকে লোয়ার দিরের মুন্ডা ও খাজানা এলাকায় হঠাৎ বন্যায় দুই নারী, দুই শিশু ও একজন পুরুষ আটকে পড়েন। উদ্ধারকর্মীরা ও স্থানীয় কল্যাণ সংগঠনগুলো মিলে তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।
পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ (PMD) জানিয়েছে, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে আসা আর্দ্র বায়ু এবং একটি পশ্চিমা তরঙ্গ পাকিস্তানের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে সোয়াত, দির, কোহিস্তান, মালাকান্ড, মানসেহরা, পেশাওয়ারসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া কিছু এলাকায় বন্যা ও ভূমিধসেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে, বিশেষ করে সোয়াত, নওশেরা, চিত্রাল, ম্যানসেহরা ও গালিয়াতে। দুর্বল ভবন, বৈদ্যুতিক খুঁটি, বিলবোর্ড ও যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারীরা নাগরিকদের নদীর তীর ও পাহাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে। পর্যটকদের জন্যও নদীর তীরে অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মুমু ২