ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানকে শান্ত করতে, ইরানকে ঘিরে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন জুয়া

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ২৮ জুন ২০২৫

ইরানকে শান্ত করতে, ইরানকে ঘিরে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন জুয়া

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে এক চমকপ্রদ কৌশল নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক বিশেষ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ৩০০০ কোটি ডলারের সম্ভাব্য বিনিয়োগ এবং নিষেধাজ্ঞা শিথিলসহ বেশ কিছু প্রণোদনা নিয়ে আবার আলোচনার টেবিলে ফিরতে চায় ওয়াশিংটন।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আলোচনাগুলো চলছে সম্পূর্ণ গোপনে, মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক প্রভাবশালী দেশ ও নেতাদের মধ্যস্থতায়। গত দুই সপ্তাহে পাঁচবারের বেশি বৈঠক হয়েছে, এমনকি সাম্প্রতিক ইসরাইল-ইরান উত্তেজনার মধ্যেও আলোচনা থেমে থাকেনি।হোয়াইট হাউজের গোপন এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের মিত্ররা। সেখানে ইরানে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নতুন একটি বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে বিনিয়োগের প্রস্তাব আসে। তবে বড় শর্ত হলো—ইরান কোনোভাবেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না।

এই শর্ত ইরান বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তাদের দাবি, এটি তাদের সার্বভৌম অধিকারে হস্তক্ষেপ। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জানান, মার্কিন ও ইসরাইলি হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, নতুন আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই।

সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিও ট্রাম্পের দাবি—ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে—তা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি ‘রাজনৈতিক নাটক’ ছাড়া কিছু নয়, কর্মসূচি চালু রয়েছে এবং হামলা তাদের দমাতে পারেনি।

যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি কোনো বিনিয়োগ করবে না, বরং আরব মিত্র দেশগুলোর মাধ্যমে এই অর্থায়ন হবে। প্রণোদনার অংশ হিসেবে ইরানকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং বিদেশি ব্যাংকে আটকে থাকা ৬০০ কোটি ডলার ব্যবহারের অনুমতির কথা বলা হয়েছে।

 

 

বিশ্লেষকদের মতে, এই হঠাৎ আলোচনার পেছনে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশলগত চিন্তা। তারা চায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা হ্রাস পাবে এবং ইরানকে চূড়ান্তভাবে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা যাবে। এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিকে সমর্থন করি, কিন্তু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের প্রশ্নে আমাদের অবস্থান অটল।”

তবে সবকিছু এখনও অনিশ্চিত। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস, সাম্প্রতিক হামলার রেশ এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপ এই আলোচনার বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। এখন প্রশ্ন—আলোচনা সফল হবে, নাকি মধ্যপ্রাচ্য আরও একটি নতুন সংঘাতের দিকে এ

ছামিয়া

আরো পড়ুন  

×