ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে চলছে সাজানো নাটক ॥ মির্জা আব্বাস

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:১৮, ১৩ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে চলছে সাজানো নাটক ॥ মির্জা আব্বাস

সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন পিন্টুর স্মরণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মির্জা আব্বাস

দেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে সাজানো নাটক চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাবেক সাংসদ ও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু স্মৃতি সংসদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। 
এদিকে অপর এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলে দেশে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হতো। 
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশে সন্দেহভাজন বিদেশীদের আগমন বেড়েছে। বিভিন্ন মিশন চালু হচ্ছে। সকল অপকর্ম ইচ্ছাকৃতভাবে করছে সরকার। এ সরকার কারও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশপ্রেমিক সরকার নয়। তিনি বলেন, করিডর নিয়ে জামায়াত-এনসিপি কেউ কথা বলছে না। সেন্টমার্টিন, সাজেক নিয়েও তারা  কথা বলছে না। বিশ্বের ডিকশোনারিতে মানবিক করিডর বলে কিছু নেই। প্রয়োজনে একেকটা নাম দিয়ে এসব বানানো হচ্ছে। 
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা কেন সেন্টমার্টিন যেতে পারব না, আমি এনসিপির ভাইদের বলতে চাই আপনারা এই বিষয় নিয়ে কথা বলেন না কেন? তিনি বলেন, দেশ ভালো অবস্থানে নেই। আবার আমরা শুনতে পাচ্ছি মানবিক করিডর দেওয়া হবে।

কেন কার স্বার্থে করিডর, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো করিডর দেওয়ার অধিকার এই সরকারের নেই। তবে বিএনপি ছাড়া করিডর নিয়ে কেউ কথা বলছে না। জামায়াত, এনসিপি, চরমোনাই কেউ কথা বলছে না। কেউ কেউ মনে করছেন বিএনপিকে শেষ করতে পারলেই আওয়ামী লীগের মতো দেশ লুটেপুটে খাওয়া যাবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধিতা না করলেও একটি অজনপ্রিয় দল শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপিকে হেয় করছে। তিনি বলেন, যারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে চায় তারা দেশ ও জনগণের শত্রু। কারণ, আওয়ামী লীগকে বিএনপি কখনো আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। ১৭ বছর বিএনপি যাদের কাছে নির্যাতিত হয়েছে তাদের পুনর্বাসন করবে এটি যারা বলে তারা বিএনপিকে হিংসা করে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ভিআইপি ট্রিটমেন্ট নিয়ে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, অথচ সরকার কিছু জানে না। তাহলে তারা কি জানে? তিনি বলেন, প্রশাসনে বিএনপি নিধন করে আওয়ামী লীগ ও জামাতপন্থিদের স্থলাভিষিক্ত করা হচ্ছে। অনেক উপদেষ্টা যারা দেশের নাগরিক না তারাই দেশ পরিচালনা করছে। মনে হচ্ছে ঔপনিবেশিক শাসন চলছে দেশে। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুকে আজ যেভাবে স্মরণ করা হচ্ছে, এই নাসির উদ্দিনদের মতো হাজারো নেতা-কর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে আজকের এই বিএনপি।
আয়োজক সংগঠনের আহবায়ক সাইদ হাসান মিন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ওলামা দলের  নেতা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ।
পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক ব্যয় করলে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হতো- রিজভী :  আওয়ামী লীগ আমলে লুটপাট ও পাচার হওয়া টাকার অর্ধেক স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করলে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হতো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নার্সদের দাবি পূরণ করা হবে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কোনো ঘটনায় আবেগবশত সিদ্ধান্ত নিয়েন না, অনেক দূর তাকিয়ে সিদ্ধান্ত নিন, না হলে কিন্তু বিপদ হতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাত ও ওয়েলফেয়ার খাতের উন্নয়নে উদ্যোগ নিন।

রিজভী বলেন, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল একজন মহীয়সী নারী ছিলেন। একজন ধনী পরিবারের মেয়ে হয়ে তিনি সমাজকল্যাণ কাজে নেমে আসেন। তিনি মানুষের সেবার জন্য নার্সিং পেশা চালু করেন। তিনি শত্রু-মিত্র সবার সেবা করেছেন। তিনি বলেন, আমাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে সেটি রাজনৈতিক কারণে। সেখানে নার্সিং-এর যে মহিমান্বিত রূপ তা মনোমুগ্ধকর। তাদের সেবার ভাষা আমি প্রকাশ করতে পারব না। পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ সেবা মায়ের সেবা। একজন নার্স মায়ের সেবা হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু আমাদের দেশে নার্সদের সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। তাদের প্রতি বৈষম্য দেখানো হয়। 
বিএনপির নার্সেস বিষয়ক সহ-সম্পাদক জাহানারা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রফেসর ডা. মো. নজরুল ইসলাম, সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক নীলোফার চৌধুরী মনি, গণশিক্ষা বিষয়ক সহ-সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।

×