
ছবি: সংগৃহীত
সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনায় দু’দেশ বড় ধরনের যুদ্ধের মুখ থেকে সরে এসে শান্তির পথে হাঁটছে। মার্কিন কূটনৈতিক তৎপরতায় ৮৭ ঘণ্টার সংঘাত শেষে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এই সময়ের মধ্যে ভারতের হামলায় অন্তত ৫০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করে ভারত এবং পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ভারতের একাধিক যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ‘আটক’ হয়েছেন বলে একটি দাবি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু ভারতীয় গণমাধ্যমে। তবে বিস্তারিত অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই খবরটি একেবারেই গুজব এবং ভিত্তিহীন।
গত ৯ মে থেকে ‘এবিপি আনন্দ’ নামের ভারতীয় এক টেলিভিশন চ্যানেল প্রথম এই দাবি তোলে যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আটক হয়েছেন। তারা রাত ১২টা ২২ মিনিটে তাদের ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট প্রকাশ করে। তবে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর সেই পোস্টটি তৃতীয়বারের মতো সম্পদনা করে লেখা হয়, ‘ভারতের হামলায় পাকিস্তানের ১৬টি শহরে বিস্ফোরণ হয়েছে।’ মূল পোস্ট থেকে পাক সেনাপ্রধান আটক হওয়ার বক্তব্য মুছে ফেলা হয়।
ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এপিবি আনন্দ ছাড়াও একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘পাকিস্তান সেনাপ্রধান আসিম মনির গ্রেফতার’র এই দাবি কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বা পাকিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যম সমর্থন করেনি। বরং ওই একই দিনে (৯ মে) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তারা উত্তেজনা প্রশমন এবং ভবিষ্যতে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটেও জেনারেল আসিম মুনিরকে বর্তমান সেনাপ্রধান হিসেবে তালিকাভুক্ত দেখা গেছে। এছাড়া এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সরকারি ওয়েবসাইটে সেনাপ্রধান হিসেবে আসিম মনিরের নাম উল্লেখ রয়েছে।
উপস্থাপিত তথ্য বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান আসিম মুনিরকে গ্রেফতারের যে দাবি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে, তা সম্পূর্ণ গুজব। সংবাদটি কোনো নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে আসেনি এবং পাকিস্তান বা আন্তর্জাতিক কোনো স্বীকৃত মাধ্যমই তা সমর্থন করেনি।
সূত্র: রিউমর স্ক্যানার
রাকিব