
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে ডেঙ্গু, করোনা এবং চিকুনগুনিয়ার মতো রোগগুলো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষাকাল শুরু হওয়ায় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বাড়ে, আর করোনার ঝুঁকি তো সবসময়ই থাকে। এই সময়ে সুস্থ থাকতে কিছু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
১. ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে মশার নিয়ন্ত্রণ:
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া মশার মাধ্যমে ছড়ায়, বিশেষ করে এডিস মশা। এই মশা দিনের বেলায় বেশি কামড়ায়।
- মশার প্রজননস্থল ধ্বংস:
- বাড়ির ভেতরে ও বাইরে কোথাও পানি জমতে দেবেন না। ফুলের টব, টায়ার, প্লাস্টিকের পাত্র, এসি বা ফ্রিজের নিচে জমে থাকা পানি নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
- ছাদবাগান বা বারান্দায় জমে থাকা পানি দ্রুত সরিয়ে ফেলুন।
- পরিত্যক্ত পাত্র, কৌটা বা বোতলে পানি জমতে দেবেন না।
- ব্যক্তিগত সুরক্ষা:
- দিনের বেলা ঘুমানোর সময়ও মশারি ব্যবহার করুন।
- মশা তাড়ানোর স্প্রে, লোশন বা কয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
- হালকা রঙের লম্বা হাতাযুক্ত পোশাক পরুন, যা শরীরকে ঢেকে রাখবে।
- জানালায় মশারোধী নেট লাগাতে পারেন।
২. করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি:
করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এর সংক্রমণ রোধে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- মাস্ক ব্যবহার: জনসমাগমপূর্ণ স্থানে বা বদ্ধ ঘরে অবশ্যই মাস্ক পরুন।
- হাত ধোয়া: ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। যদি সাবান না থাকে, তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
- সামাজিক দূরত্ব: ভিড় এড়িয়ে চলুন এবং অন্যদের থেকে অন্তত ৩ ফুট (১ মিটার) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
- হাঁচি-কাশি: হাঁচি বা কাশির সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে নাক-মুখ ঢাকুন। ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলুন।
- চোখ, নাক, মুখ স্পর্শ না করা: অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
- ভ্যাকসিন গ্রহণ: যদি এখনও করোনা টিকার সব ডোজ না নিয়ে থাকেন, তাহলে দ্রুত টিকা নিন।
৩. সাধারণ সতর্কতা ও প্রতিরোধ:
- পুষ্টিকর খাবার ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন। প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান।
- পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
- শরীরচর্চা: নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- মানসিক স্বাস্থ্য: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। প্রয়োজনে মেডিটেশন বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন।
- লক্ষণ দেখা দিলে: যদি জ্বর, কাশি, সর্দি, শরীর ব্যথা বা অন্য কোনো অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা রাখুন। পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হন।
এই সময়ে সচেতনতা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে এই রোগগুলো থেকে সুরক্ষিত রাখতে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
সাব্বির