মৃত্যুর ঠিক আগে মহাবিশ্বের অন্যতম রহস্য সমাধান করেছিলেন স্টিফেন হকিং!

মৃত্যুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত বিজ্ঞানচর্চায় নিয়োজিত ছিলেন কিংবদন্তি পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি রেখে গেছেন এক চাঞ্চল্যকর তাত্ত্বিক মডেল, যা হয়তো মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আমূল বদলে দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে মানুষের কল্পনায় থাকা মাল্টিভার্স বা বহু মহাবিশ্বের ধারণা এবার বাস্তবের কাছাকাছি আসছে হকিংয়ের চূড়ান্ত গবেষণার মাধ্যমে।

তারার পেছনে লুকিয়ে থাকা শেষ বার্তা

স্টিফেন হকিং ও তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী বেলজিয়ামের কেএইউ লুভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী টমাস হার্টগ একসঙ্গে কাজ করে এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেন। গবেষণার মূল প্রতিপাদ্য ছিল—মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও এর বহুবিধ রূপ। হকিং এবং হার্টগের মতে, বিগ ব্যাং-এর মাধ্যমে একটি অগোছালো অসীম মহাজগত নয়, বরং একটি সংগঠিত এবং যৌক্তিক নিয়মে গঠিত বহু মহাবিশ্বের (Multiverse) সৃষ্টি হয়েছিল।

মাল্টিভার্স: এবার কি বাস্তব বিজ্ঞান?

এই গবেষণায় মাল্টিভার্স ধারণাকে একেবারে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন হকিং ও হার্টগ। তাঁরা দাবি করেন, বহু মহাবিশ্ব অসীম নয়, বরং সীমিত সংখ্যক এবং প্রত্যেকটির নিজস্ব পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম রয়েছে, যা বিজ্ঞানীদের দ্বারা পর্যবেক্ষণ ও অধ্যয়নযোগ্য। অর্থাৎ এটি শুধুমাত্র কল্পবিজ্ঞানের বিষয় নয়, বরং গবেষণাযোগ্য বাস্তব ধারণায় পরিণত হতে পারে।

মানুষের অস্তিত্ব নিয়ে নতুন ভাবনার দিক

এই গবেষণার বৈজ্ঞানিক গুরুত্বের পাশাপাশি এর গভীর মানবিক তাৎপর্যও রয়েছে। এটি আমাদের স্থান ও অস্তিত্ব নিয়ে এক নতুন আলোচনা শুরু করেছে। যদি বহুমহাবিশ্ব সত্যি হয়, তাহলে আমাদের মহাবিশ্বটি কেবল একটি বিকল্প বাস্তবতা—এই চিন্তা আমাদের অস্তিত্বের অর্থ ও মহাবিশ্বে আমাদের ভূমিকা নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করবে।

একজন মহাবিজ্ঞানীর শেষ উপহার

এই গবেষণা শুধু বিজ্ঞান নয়, এক জেদি মানুষের অদম্য প্রচেষ্টার নিদর্শন। মৃত্যুশয্যায় থেকেও স্টিফেন হকিং চাইতেন, তাঁর শেষ কাজটি নতুন গবেষণার ভিত্তি হোক। তাঁর জীবনের শেষ এই গবেষণাই হয়তো এক নতুন কসমিক যুগের সূচনা করবে।

গবেষণাটি প্রকাশিত হওয়ার পর টমাস হার্টগ বলেন, ‘হকিং চেয়েছিলেন এমন একটি তত্ত্ব দাঁড় করাতে, যা ভবিষ্যতের বিজ্ঞানীদের পথ দেখাবে।’ এখন প্রশ্ন—এই ‘শেষ বার্তা’ কি মানবজাতিকে মহাবিশ্ব সম্পর্কে এক নতুন যাত্রার সূচনায় নিয়ে যাবে?

সূত্র: https://3dvf.com/en/shortly-before-his-death-stephen-hawking-reportedly-solved-one-of-the-universes-greatest-mysteries/