ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

শুধু চাকরি নয়, বিশ্বকে জানাতে শেখায় অ্যাডাম স্মিথ বিজনেস স্কুল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ৩০ জুন ২০২৫

শুধু চাকরি নয়, বিশ্বকে জানাতে শেখায় অ্যাডাম স্মিথ বিজনেস স্কুল

ছবি: সংগৃহীত

স্কটল্যান্ডের University of Glasgow-এর অ্যাডাম স্মিথ বিজনেস স্কুল কেবল ব্যবসা শিক্ষা দিচ্ছে না—তারা শিক্ষার্থীদের তৈরি করছে গোটা পৃথিবী বুঝে চলার জন্য। ১৪০টিরও বেশি দেশের শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছেন, যা একটি “co-creative learning environment” তৈরি করেছে। এখানে জ্ঞান শুধু শিক্ষক থেকে ছাত্রের দিকে নয়, বরং ছাত্র থেকে ছাত্রের মধ্যেও বহমান।

অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সিনিয়র লেকচারার অ্যান্থনি ডিভাইন বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের ক্রিটিক্যাল থিংকার হতে শেখাই—যাতে তারা বিশ্বমঞ্চে নিজেদের ভূমিকা বুঝে নিতে পারে।”

স্কুলের স্টুডেন্ট রিক্রুটমেন্ট ম্যানেজার কেটি লিঞ্চ বলেন, “আমরা বৈচিত্র্য ধরে রাখতেই শুধু নয়, বরং একটি গভীর কমিউনিটি গড়ে তুলতেই কাজ করি। শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের মতের মানুষও পায়, আবার ভিন্নমতও বুঝে নিতে শেখে।”

স্কুলটি AACSB, AMBA, এবং EQUIS – এই তিন আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি পেয়েছে, যা বিশ্বের শীর্ষ ১% বিজনেস স্কুলের একটি করে তুলেছে একে।

শুধু ক্যাম্পাসে নয়, কমিউনিটির এই অনুভব শহরজুড়েই। গ্লাসগো স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর হলেও এখানকার লোকজন, সংস্কৃতি, ও জীবনধারা খুবই উষ্ণ ও গ্রহণযোগ্য।

ডিভাইন বলেন, “এটি এমন এক শহর যেখানে মানুষ নতুনদের আপন করে নেয়। ‘People Make Glasgow’ শুধু স্লোগান নয়, বাস্তব।”

লিঞ্চ যোগ করেন, “এই শহরে অনেক ছাত্রই পড়তে এসে থেকে যেতে চায়, কারণ এখানকার অভিজ্ঞতা তাদের জীবন বদলে দেয়।”

গথিক স্থাপত্যঘেরা ক্যাম্পাসের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি উদ্বোধন করেছে ১১,৬০০ বর্গমিটার আয়তনের নতুন পোস্টগ্র্যাজুয়েট টিচিং হাব ও বিজনেস স্কুল ভবন।

ডিভাইন বলেন, “এই ভবন অ্যাডাম স্মিথের উত্তরাধিকারকে সম্মান জানায়। এর মাধ্যমে স্কুল এখন আরও দৃশ্যমান হয়েছে—আগে আমরা যেন শহরের এক কোণে লুকিয়ে ছিলাম।”

লিঞ্চ বলেন, “পুরনো আর নতুনের এই মেলবন্ধনই আমাদের শিক্ষা-দর্শনের প্রতিচ্ছবি।”

স্কুলের শিক্ষা-পদ্ধতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ইন্ডাস্ট্রি-ইনটিগ্রেটেড প্রজেক্ট লার্নিং। বাস্তব কোম্পানির সমস্যার সমাধান করতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রকল্প চলে।

ডিভাইন বলেন, “আমরা কোম্পানিগুলিকে বলি যেন তারা প্রকৃত সমস্যা দেয়—যেগুলোর জন্য তারা সাধারণত কনসালটেন্ট নিয়োগ করে।”

এই মডেলে ছাত্ররা প্রকল্পের জন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় এবং কোম্পানির রিক্রুটারদের সামনে কাজ উপস্থাপন করে। এটাই হয়ে ওঠে একটি বাস্তব-দুনিয়ার সিমুলেশন।

ডিভাইন সোজাসাপ্টা বলেন, “আমাদের দায়িত্ব নয়, আপনাকে চাকরি দেওয়া। সেটা অন্য স্কুলগুলো বলে, কিন্তু আমরা বলি—আমরা আপনাকে প্রস্তুত করবো যাতে আপনি নিজে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “সবাইকে বড় কোম্পানিতে পাঠিয়ে দিয়ে স্কুল সফল নয়। এমন অনেক স্কুলে কাজ করেছি যেখানে দু’বছর পর সেই ‘সাফল্যধারীরা’ দুঃখে ডুবে থাকতো।”

স্কুলটি চায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্যোক্তা মানসিকতা, সচেতনতা ও মানবিকতা তৈরি করতে—যা অ্যাডাম স্মিথের দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু। ডিভাইন বলেন, “আমরা শুধু গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছি না, আমরা বিশ্বনাগরিক তৈরি করছি।”

মুমু ২

×