
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কোনো শর্ত মেনে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আইনের দোহাই দিয়ে একজন প্রবীণ নাগরিককে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া তার পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছেন শর্ত মেনে বিদেশ যেতে রাজি নন। কোনো শর্ত সাপেক্ষে তিনি দেশের বাইরে যাবেন না। আর আমরা তো জোর করে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিয়ে যেতে পারব না। আমাদের পক্ষে সেটা সম্ভব না। আমরা এভাবে যা আছে সেই চিকিৎসা করিয়ে যাবো। তবে সরকার চাইলেই তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে। এজন্য সরকারের সদিচ্ছা দরকার।
খালেদার সাজা স্থগিতের শর্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দিলে আইনের ব্যত্যয় ঘটবে না। সরকার তার দ- স্থগিতের শর্তগুলো প্রত্যাহার করে নিলে গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসা প্রাপ্তি থেকে আর বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। আইনের কোথাও উল্লেখ নেই চিকিৎসার জন্য শর্ত প্রত্যাহার করার সুযোগ থাকবে না। তিনি বলেন, অসুস্থ জেনেই সরকার তাকে বাড়িতে থাকার শর্তে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দিয়েছিল। সুতরাং যে অসুস্থতার সুচিকিৎসার সুযোগ দেশে নেই, সেই রোগের চিকিৎসা যে জায়গায় রয়েছে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দিলে আইনের ব্যত্যয় ঘটবে না। অন্যদিকে সুচিকিৎসার সুযোগ পাওয়া একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এই মৌলিক অধিকার আমাদের দেশের সংবিধানই নিশ্চিত করেছে।
ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি দেখছেন না চিকিৎসকরা। লিভারের জটিল সমস্যার পাশাপাশি তার দুটি কিডনি দুর্বল হয়ে পড়েছে। ১৫ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড দ্রুত তাকে বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। চিকিৎসা পাওয়া খালেদা জিয়ার মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে বাধা দেওয়া সংবিধানকে অবজ্ঞা করা। খালেদা জিয়াকে সংবিধানে দেওয়া চিকিৎসা সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে- যা অন্যায়, অমানবিক ও অসাংবিধানিক। সরকার খালেদা জিয়াকে ইচ্ছা করে আটকে রেখেছে। অথচ এর আগে দ-প্রাপ্ত অনেকেই বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। সারাবিশ্বে এমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে। তাই খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিলে তা কোনো নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে না বরং প্রতিষ্ঠিত মানবিক ও আইনানুগ দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু প্রমুখ।