
সমাজের অনেক মুসলমান নামাজ-রোজায় যত্নবান হলেও জীবিকা ও সামাজিক আচার-আচরণে ইসলামি বিধানকে উপেক্ষা করছেন। বিশেষ করে সুদ, ঘুষ, যৌতুক, হারাম আয়, চাঁদাবাজি এবং জমি দখলের মতো গুরুতর অপরাধগুলো এখন সমাজে ব্যাপক হারে চলছে। অথচ ইসলামে এগুলো শুধু নিষিদ্ধই নয়, কিছু ক্ষেত্রে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে সরাসরি যুদ্ধের ঘোষণা রয়েছে।
সুদের ভয়াবহতা: আল্লাহ ও রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধ
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা অবশিষ্ট রয়েছে তা বর্জন করো, যদি তোমরা মু’মিন হও। আর যদি তা না করো, তবে জেনে রাখো, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা রয়েছে।” (সূরা বাক্বারাহ্: ২৭৮-২৭৯)
বিশেষজ্ঞদের মতে, সমাজে দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও অর্থনৈতিক দাসত্বের অন্যতম প্রধান কারণই হলো সুদভিত্তিক লেনদেন।
ঘুষ: দুই পক্ষই লানতের পাত্র
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “ঘুষদাতা এবং ঘুষগ্রহীতার উপর আল্লাহর লানত।” (তিরমিজি)
ঘুষ সমাজে দুর্নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে জোরদার করে।
যৌতুক: ইসলামে হারাম, সমাজে অভিশাপ
যৌতুক ইসলামি শরিয়তের পরিপন্থী। এটি নারীর প্রতি অবিচার ও নির্যাতনের মূল উৎসগুলোর একটি। ইসলামে কনে নয়, বর মাহর প্রদান করে থাকে।
হারাম আয়: দোয়া কবুল হয় না
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, “যে ব্যক্তি হারাম খাদ্য খায়, তার দোয়া কবুল হয় না।”(মুসলিম)
হারাম উপার্জন মানুষের আত্মাকে কলুষিত করে এবং পরিবারের ওপর আল্লাহ্র রহমত নেমে আসা বন্ধ করে দেয়।
জমি দখল: ভয়াবহ শাস্তির ঘোষণা
রাসূল ﷺ বলেন, “যে ব্যক্তি অন্যের জমি জোর করে দখল করে, কিয়ামতের দিনে তাকে সাত তল জমিতে গাঁথা হবে।” (সহীহ মুসলিম)
জোর করে জমি দখল একটি সামাজিক ব্যাধি হয়ে উঠেছে, যা ইসলাম ও মানবাধিকার উভয়ের বিরুদ্ধাচরণ।
নিজেকে মুসলমান দাবি করতে হলে শুধু নামাজ, রোজা যথেষ্ট নয়। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক জীবনে ইসলামের শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায়, এ সব হারাম কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরও "মুসলমান" পরিচয় দেওয়া আসলে এক আত্মপ্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
সমাজের প্রতি আহ্বান:
সমাজের প্রতিটি স্তর পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় নেতা ও প্রশাসনের সম্মিলিত প্রয়াসেই হারাম ও অনৈতিকতা রোধ করা সম্ভব।
মিমিয়া