ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১২ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১

ছাত্র সংগঠনের দায়

ইকবাল কবির

প্রকাশিত: ২১:০৮, ২ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র সংগঠনের দায়

দেশের সমাজ ব্যবস্থার চরম অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে

দেশের সমাজ ব্যবস্থার চরম অবনতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের রাজধানী ঢাকা বিভিন্ন মহানগর এলাকা ও মফস্বলের জেলা শহরগুলোতে আমাদের সমাজ কিছুতেই গনপিটুনির মতো মারাত্মক সন্ত্রাসী কর্মকা- থেকে মুক্ত হতে পারছে না। সম্প্রতি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রদের হাতে মানসিকভাবে অসুস্থ যুবক তোফাজ্জলের নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রদের হাতে মানসিকভাবে অসুস্থ যুবক তোফাজ্জলের নির্মম মৃত্যুর ঘটনা সারাদেশে আলোড়ন তুলেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া, বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলসহ বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ মাধ্যমে নিহত ঘটনার বিচার দাবি করেছেন দেশের সচেতন মানুষ। তোফাজ্জাল ও মাসুদের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার করে হত্যা মামলার সর্বোচ্চ শাস্তির  দাবি করেছেন দেশের সচেতন নাগরিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন সংগঠন থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে স্মরকলিপি দিয়েছে ইতোমধ্যেই। এ সকল ঘটনা চলতে দেওয়া যায় না। সকল রাজনৈতিক দল যদি তাদের ছাত্র সংগঠনের বিপথগামী ছাত্রদের লাগাম টেনে না ধরে, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর সুনাম ক্ষুণœ হবে।

পাশাপাশি দলের জনসমর্থন কমবে। এটাই স্বাভাবিক। দেশ ও দশের জানমাল নিরাপত্তায় যেমন সরকারের দায় থাকে, তেমনি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের দায় ও দায়িত্ব আছে। ছাত্র সংগঠনের নাম ব্যবহার করে ভালো মানুষকে আটক করে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে নিহত করা জঘন্যতম অপরাধমূলক কর্মকা-। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের মনমানসিকতা থেকে বেড়োনোর পদক্ষেপ হচ্ছে ছাত্রদের সচেতন হওয়া। একটি কর্মকা- ঘটানোর আগে তাদের খোঁজখবর নিয়ে গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটানো উচিত।

সঠিক তথ্য না জেনে কোনো ব্যক্তিকে আটক করে, মারপিট করে গণপিটুনির মতন ঘটনা পরিহার করা উচিত। এ সকল জড়িত ব্যক্তিকে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা যথাযথভাবে পালন করার পদেক্ষেপ গ্রহণ জরুরি । এ সকল চাঞ্চল্যকর হত্যাকা- ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পারলেই সমাজ থেকে এমন অপরাধ প্রবণতা থেকে মুক্ত হবে দেশ। ছাত্র নামধারী বিভিন্ন দলের ছাত্র সংগঠনের ছত্রছায়ার সুবাদে কথিত ছাত্ররা গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। বিষয়টি উদ্বেগের। এমন ঘটনা থেকে পরিত্রাণের বিষয়ে স্ব স্ব এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

দেশব্যাপী স্লোগান তুলতে হবে যেখানেই গণপিটুনি সেখানেই প্রতিরোধ।  ছাত্র নামধারীরা দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাআঙ্গুলি দেখিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। যদিও আইন নিজের তুলে নেওয়া একটি অপরাধমূলক কর্মকা-। তথাপিও দেশ থেকে গণপিটুনির ঘটনা কমানো যাচ্ছে না। দেশে অহরহ গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটছে। এ সকল ঘটনায় নিহত ব্যক্তির বেশির ভাগই নীরহ ও নিরপরাধ ব্যক্তি। 
সিরাজগঞ্জ থেকে

×