ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১

পুতুলনাট্য উৎসব

প্রকাশিত: ২২:২৫, ১ অক্টোবর ২০২৩

পুতুলনাট্য উৎসব

.

শিল্পকলা একাডেমি পর্যন্ত নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটারে শুরু হয়েছে পুতুলনাট্য উৎসব, যা  চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। উৎসবে মানুষ থেকে পশু-পাখির রূপে প্রতিটি পুতুলকে সাজানো হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে। অনুষ্ঠান চলাকালে এসব পুতুলের নানা সংলাপে পরিবেশ, প্রকৃতিসহ সমাজ সচেতনতামূলক বিভিন্ন বার্তা মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সব বয়সী দর্শক-শ্রোতার মাঝে। গণজাগরণের পুতুলনাট্য উৎসবে দর্শকদের সময় কাটছে ভালোলাগার অনুভবে। সেদিন পুতুল নাচে উচ্ছ্বসিত ছিলেন শিশু থেকে পরিণত বয়সী দর্শকবৃন্দ। অবশিষ্ট দিনগুলোতেও আনন্দ-উচ্ছ্বাসের ঘাটতি থাকবে না বলেই প্রত্যাশা।

শিল্প সংস্কৃতির স্রোতধারায় সৃজনশীল   মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে শিল্পকলা একাডেমি। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নেঅপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় শিল্প নিয়ে পৌঁছে যাব আমরা উন্নতির শিখরে’  প্রতিপাদ্যে গ্রহণ করা হয়েছে গণজাগরণের শিল্প আন্দোলন কর্মসূচি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলার  প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষ্যবহ পুতুলনাট্য উৎসব। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ঢাকা থেকে সূচিত উৎসবটি ছড়িয়ে যাবে সারাদেশে। দেশের ৪৪টি জেলার ১২০টি স্থানে উপস্থাপিত হবে ৩০টি পুতুলনাট্য দলের পরিবেশনা।

পুতুলের কথা বলা নৃত্য একসময় আমাদের মুগ্ধ করত। দীর্ঘ সময় পার হলেও সেই ঘোর বিস্ময় সহসাই কাটত না। যারা পুতুল নাচের পেছনে কাজ করেন, তাদের দক্ষতাই এর অন্যতম কারণ। শিশুদের জন্য পুতুল নাচে অনেকটা শিক্ষণীয় থাকে। এক সময় এই শিল্পটি দারুণভাবে সক্রিয় ছিল দেশব্যাপী। কালক্রমে পুতুলনাট্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছিল। তবে বর্তমানে আবার স্বমহিমায় ফিরে এসেছে। বর্তমানে সারাবিশ্বে পুতুলনাট্য উৎসব হয়। আমাদের  দেশে আগে গ্রামগঞ্জে উৎসব হতো। ধীরে ধীরে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে সারাদেশে পুতুলনাট্যের উৎসব শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ বাঙালি একটি উৎসবপ্রিয়-সংস্কৃতিমনস্ক, অসাম্প্রদায়িক জাতি। গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় সমতা ইত্যাদির ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। দেশটির উত্থান অভ্যুদয়ের পেছনে অন্যতম নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে সুমহান ভাষা সাংস্কৃতিক আন্দোলন। ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত সমৃদ্ধ হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ সকলের সম্মিলিত ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে পারস্পরিক ধর্মীয় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, সম্প্রীতি সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবহমান বাঙালির ঐতিহ্য শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশে যুগোপযোগী উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্কৃতিসেবীরা নতুন প্রজন্মের চাহিদা, চিন্তাভাবনা বিশ্বাসের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশীয় শিল্প-সংস্কৃতিকে আধুনিক বিশ্বোপযোগী করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। তাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশীয় শিল্প-সংস্কৃতি সুরক্ষা, বিকাশ উন্নয়নে দেশবাসীর সর্বদা সচেষ্ট থাকা জরুরি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই আন্তর্জাতিক পরিম-লে দেশীয় শিল্প-সংস্কৃতিকে মানসম্মত হিসেবে তুলে ধরা সম্ভব।

×