
সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে সামরিক বিমানঘাঁটির রানওয়ের দূরত্ব মাত্র ১.৮ কিলোমিটার, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও স্থাপনা বিধিমালার আলোকে গুরুতর অনিয়ম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মাইলস্টোন স্কুলের একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২০ জন নিহত এবং বহু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হওয়ার পর এই দূরত্ব নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, জনবহুল আবাসিক এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এত নিকটে সামরিক বিমান চলাচল জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, স্কুল, হাসপাতাল বা জনবহুল এলাকায় বিমানঘাঁটির রানওয়ে অন্তত ৫ কিলোমিটার দূরে থাকার কথা।
আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিএও (ICAO) এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, নিচের দূরত্বগুলো মানা জরুরি:
- স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়: অন্তত ৪-৫ কিলোমিটার দূরে
- হাসপাতাল: ৫ কিলোমিটার বা তার বেশি
- জনবহুল আবাসিক এলাকা: কমপক্ষে ৩-৫ কিলোমিটার
- বাজার, ধর্মীয় উপাসনালয় ও জনসমাগমস্থল: অন্তত ৫ কিলোমিটার
নগর পরিকল্পনাবিদ আর্কিটেক্ট রফিক জামান বলেন, "শিশুদের স্কুলের পাশ দিয়ে প্রতিদিন যুদ্ধবিমান বা প্রশিক্ষণ বিমানের ওড়া-ওড়া কেবল বিরক্তিকর নয়, এটি এক ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে তার মাশুল দিতে হলো।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা সরকারের কাছে "জনবহুল এলাকায় বিমান প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ ও স্থানান্তরের" দাবি তুলেছেন।
ঘটনার পর বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত রানওয়ে ও আশপাশের জনবসতির দূরত্ব নিয়ে কোনও সরকারি ব্যাখ্যা আসেনি।
মানবাধিকার কর্মী সালমা সুলতানা বলেন, “এই অনিয়মের ফলেই আজ শিশুরা আগুনে পুড়েছে। এই দায় শুধু একটি দুর্ঘটনার নয়, এটি একটি নীতিগত ব্যর্থতা।”
সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে জনগণের আস্থা আরও ক্ষুণ্ন হবে, বলেও মত দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
এই অনিয়ম ও দূরত্ব লঙ্ঘনের কারণেই মাইলস্টোনের এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তা বিধি কঠোরভাবে মানা না হলে ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হবে না।
হ্যাপী