ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

বিমান বিধ্বস্তে শ্রেণীকক্ষ থেকে কেন বের হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা?

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ২১ জুলাই ২০২৫

বিমান বিধ্বস্তে শ্রেণীকক্ষ থেকে কেন বের হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা?

ছবি:সংগৃহীত

 রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল-কলেজ ভবনের ওপর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ জন দগ্ধ শিক্ষার্থী ও শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকতে পারেন। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী ও পুলিশের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

বিমানটি কলেজের দোতলা একটি ভবনের ওপর বিধ্বস্ত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমানটি পশ্চিম দিক থেকে এসে ভবনের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত একটি মাঠের ওপর বিধ্বস্ত হয়, যেখানে নারকেল গাছের সারি ছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিমানটি সরাসরি একটি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে পড়ে। দুর্ঘটনার সময় শ্রেণিকক্ষে ক্লাস চলছিল এবং সেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ক্লাস থ্রি ও ফোরের শ্রেণিকক্ষে সরাসরি বিমানটি আঘাত হানে, এবং দোতলায় সেভেন ও এইট শ্রেণির কক্ষগুলোও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ফলে পুরো ভবন জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিমানের আঘাতে শ্রেণিকক্ষগুলোর দরজার মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কক্ষের ভেতরেই আটকে পড়েন এবং বের হতে পারেননি।

উদ্ধারকর্মীরা জানান, আগুনের তীব্রতা ও ধ্বংসস্তূপের কারণে প্রথম দিকে কক্ষগুলোর ভেতরে ঢোকা সম্ভব হচ্ছিল না। অনেক শিক্ষার্থী আগুনে পুড়ে দগ্ধ হন এবং বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই স্থানীয় বাসিন্দারা ও কলেজের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার তৎপরতায় অংশগ্রহণ করেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে আহতদের অ্যাম্বুলেন্স ও হেলিকপ্টারে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উদ্ধার কার্যক্রম এখনো চলছে। ভবনটি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। উদ্ধারকাজের জন্য একটি বড় ক্রেন আনা হয়েছে, যার সাহায্যে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

উদ্ধারকারীদের পক্ষ থেকে বারবার জানানো হচ্ছে, জনসাধারণ যেন ঘটনাস্থলে ভিড় না করে বরং আহতদের সহায়তার জন্য হাসপাতালগুলোতে রক্তদান করেন। বিভিন্ন গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে যাতে উদ্ধার কার্যক্রমে কোনো বিঘ্ন না ঘটে। যদিও অনেক মিডিয়াকর্মী পরে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন এবং বিধ্বস্ত শ্রেণিকক্ষের মর্মান্তিক দৃশ্য চিত্রায়িত করেন।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের পোড়া ব্যাগ, বই, স্কুল ড্রেস, টিফিন বক্স ও জুতা উদ্ধার করা হয়েছে, যা দুর্ঘটনার ভয়াবহতা বোঝাতে যথেষ্ট।

এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও কেউ আটকা পড়ে আছেন কি না। উদ্ধারকর্মীরা ভেতরে প্রবেশ করে বিমানের অংশ ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করছেন। নিহত ও আহতের সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিত নয়।

পরিবারের সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে, যারা এখনো তাদের সন্তানদের সন্ধান পাননি, তারা হাসপাতাল ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/NG5zhfno1Mc?si=uyhjh7ciceb8ANo7

 

 

মারিয়া

আরো পড়ুন  

×