ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ২৭ মে ২০২৫; আপডেট: ১৪:২১, ২৭ মে ২০২৫

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ঘিরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ

ছবি: সংগৃহীত।

২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা একটি চার্জশিটে সে সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল তথ্য উঠে এসেছে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।

চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট রাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্যাং অফ ফোর নামে পরিচিত চারজন শীর্ষ উপদেষ্টার পরামর্শে আন্দোলন দমনে কঠোর অবস্থান নেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিপূর্ণ অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। ওই সময় দেশজুড়ে চলমান গণঅভ্যুত্থান এবং ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ সরকারকে চাপে ফেলে।

চার্জশিট অনুযায়ী, ঢাকার চানখারপুল এলাকায় ১৪ জুলাই সংঘটিত মানবতা-বিরোধী অপরাধের প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনা সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু উপস্থিত সামরিক কর্মকর্তারা সেই নির্দেশের বিরোধিতা করেন। এতে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকীর সঙ্গে সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়।

নথিতে আরও উল্লেখ রয়েছে, শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহেনা তাকে পদত্যাগের অনুরোধ জানালেও তাতে তিনি রাজি হননি। পরবর্তীতে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে তিনি পদত্যাগে সম্মত হন। ৫ আগস্ট দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র দিয়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান।

চার্জশিটে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে, যেখানে স্কুলছাত্রসহ সাধারণ মানুষ নিহত হন। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের নির্দেশে এই দমন অভিযানে অংশ নেয়। ১৪ জুলাই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো সশস্ত্র হামলার কথাও প্রামাণ্যভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিলকৃত চার্জশিটে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এমন পর্যাপ্ত প্রমাণ রয়েছে যা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় মানবতা-বিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। প্রয়োজনীয় বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে তাকে দায়ী করা সম্ভব বলেও মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট তদন্তকারীরা।

এই চার্জশিট আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতি ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সূত্র: https://short-link.me/-a8t

মিরাজ খান

×