ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নতুন বাজেটে যেভাবে হবে মানুষের কল্যাণ

প্রকাশিত: ১০:০৮, ২৯ মে ২০২৫

নতুন বাজেটে যেভাবে হবে মানুষের কল্যাণ

ছবি:সংগৃহীত

আসন্ন বাজেটের মূল দর্শনই হচ্ছে, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণ ও অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালিউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, এবারের বাজেট হবে এক "ব্যালেন্স বাজেট", যার মাধ্যমে সমাজের সকল শ্রেণিকে সমানভাবে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।

 

 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রাই শুরু হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পথ ধরে। তাই বাজেটেও সেই নীতির প্রতিফলন ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরকার চাইছে উন্নয়ন যেন কেবল একটি নির্দিষ্ট শ্রেণিতে সীমাবদ্ধ না থেকে সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছায়।

অর্থ উপদেষ্টার ভাষ্য অনুযায়ী, *সমতাভিত্তিক সমাজ নির্মাণই* তার প্রধান লক্ষ্য, যেখানে মানুষের কল্যাণই অগ্রাধিকার পাবে। তিনি বলেন, "বাজেটকে এমনভাবে সাজাতে চাই যাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সমান সুযোগ পায়। ব্যালেন্সড একটি কাঠামো তৈরির চেষ্টা করছি।"

 

 

গরিবদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা খাতটি ঢেলে সাজানো হচ্ছে। বাড়ছে এই খাতের আওতা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, "আমরা বরং টাকা না বাড়িয়ে কাভারেজ বাড়াতে চাই। অনেক খরচ অহেতুক যাচ্ছে, একই পরিবারে একাধিক ব্যক্তি ভিজিটর কার্ড পাচ্ছে। এসব শনাক্ত করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের অন্তর্ভুক্ত করছি।"

এছাড়া, কিছু অপ্রয়োজনীয় ভাতা বাতিল করে তহবিলকে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হলো, নিম্নআয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনযাত্রার ব্যয় কিছুটা হলেও কমিয়ে আনা।

 

খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এবার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যাতায়াত খাতে বাড়তি বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। এসব মৌলিক খাতের উন্নয়নকে সরকারের অন্যতম প্রাধান্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

যদিও এবারে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হচ্ছে না, তবে অর্থ উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছেন যে, অর্থনীতির প্রান্তিক অংশ, যেমন ছোট ও মাঝারি শিল্প, স্টার্টআপ ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য থাকবে বিশেষ সুবিধা। "এক্সেস টু ফাইনান্স" বাড়ানোর দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমান অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং বিনিয়োগে মন্দাভাবের মধ্যে দাঁড়িয়ে সরকার চায় ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতি আনতে। এজন্য ব্যবসার খরচ কমিয়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনাই অর্থ উপদেষ্টার লক্ষ্য।

তিনি বলেন, "মানুষের জীবনে আপাতদৃষ্টিতে কিছু উন্নতি দেখা গেলেও কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ এখনও সীমিত। সব কিছু একটি বাজেটেই করা সম্ভব নয়, তবে সংকটের মধ্যেও আমরা সম্ভাবনার বার্তা দিতে চাই।"

 

সব মিলিয়ে এবারের বাজেট সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সমতা এবং গরিব-মধ্যবিত্তের জীবনমান উন্নয়নের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। সংকটের মাঝে স্বস্তির পরশ দেওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে বাজেট পেশ করতে যাচ্ছে সরকার।

আঁখি

×