
ছবি:সংগৃহীত
বাংলাদেশে ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা ও জালিয়াতি রোধে কার্যকর হয়েছে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩। এই আইনের অধীনে অবৈধ জমি দখল, জাল দলিল তৈরি, মিথ্যা পরিচয়ে জমি হস্তান্তরসহ মোট ২৭টি ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ভূমি অপরাধের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আইনি কাঠামো নিশ্চিত করেছে।
আইন অনুযায়ী,
- অন্যের জমিকে নিজের দাবি করা,
- ভূমি-সংক্রান্ত তথ্য গোপন করা,
- জাল দলিল তৈরি বা সম্পাদন করা,
- ক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও জমি হস্তান্তর করা,
এমন অপরাধের জন্য অনধিক ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড নির্ধারিত হয়েছে।
এছাড়াও,
- জমির পুরো মূল্য বুঝে পাওয়ার পরও হস্তান্তর না করলে ২ বছরের কারাদণ্ড,
- অবৈধ দখলে রাখলে ২ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড,
- সরকারি বা জনসাধারণের জমি অবৈধভাবে দখলে রাখলে ২ বছরের কারাদণ্ড,
এই আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আইনের ১৬ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো অপরাধ সংগঠনে সহায়তা বা প্ররোচনা প্রদানকারীকেও একই শাস্তি ভোগ করতে হবে। আইন প্রয়োগের সুবিধার্থে সব অপরাধকে আমলযোগ্য ও গ্রেফতারযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, ফলে থানাতেই সরাসরি মামলা দায়ের করা সম্ভব এবং পুলিশ বিনা পরোয়ানায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারবে।
এছাড়াও, নতুন আইনে দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ার বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং বিচার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার লক্ষ্যে দেওয়ানী কার্যবিধিতে সংশোধন আনা হয়েছে। এখন দুই বছরের মামলা এক বছরে, এক বছরের মামলা ছয় মাসে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আইনের ৮ (৭) ধারায় বলা হয়েছে, ভূমি দখল উদ্ধারের জন্য দেওয়ানী আদালতের আদেশে বা আদালতের উদ্যোগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব প্রদান করা যাবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, জমির দখলের অধিকার থাকবে—
সর্বশেষ হালনাগাদ খতিয়ানের মালিক,
- তার উত্তরাধিকার,
- বৈধ দলিলধারী বা আদালতের আদেশে অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
- তবে একই জমি নিয়ে একাধিক দলিল থাকলে কোনটি প্রাধান্য পাবে, তা নিয়ে আইনে স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
আইনের ২০ ও ২১ ধারা অনুযায়ী, মামলার সাক্ষীর সুরক্ষা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই আইন ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে এবং সাধারণ মানুষকে প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা করবে।
মারিয়া