ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পণ্য কিনে প্রতারিত? কোথায় কিভাবে অভিযোগ করলে পাবেন সঠিক বিচার/ক্ষতিপূরণ

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ৩১ মে ২০২৫; আপডেট: ১৪:৪৪, ৩১ মে ২০২৫

পণ্য কিনে প্রতারিত? কোথায় কিভাবে অভিযোগ করলে পাবেন সঠিক বিচার/ক্ষতিপূরণ

ছবিঃ সংগৃহীত

পচা আলুর সঙ্গে ভালো আলু সিদ্ধ করে বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সরবরাহ, অনলাইনে ভুল পণ্য ডেলিভারি কিংবা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রির মতো ঘটনা এখন আর উপেক্ষিত থাকছে না। ভোক্তারা এখন তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন এবং ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯’-এর আওতায় অভিযোগ দাখিল করে প্রতিকার পাচ্ছেন।

সম্প্রতি ঢাকার এক বাসিন্দা আলামিন সাহেব অনলাইন থেকে একটি ১৭ হাজার টাকার স্মার্টফোন অর্ডার করেন। তবে হাতে পান একটি সস্তা চাইনিজ ফোন। তিনি জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (DNCRP)-এর ওয়েবসাইটে অভিযোগ দাখিল করেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রমাণ উপস্থাপন করেন। মাত্র ১২ কর্মদিবসের মধ্যে অভিযোগ যাচাই করে তাকে ক্ষতিপূরণসহ সঠিক মোবাইল ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়, যার ২৫ শতাংশ আলামিন সাহেবকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রদান করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতারণা, ভেজাল পণ্য বিক্রি, ওজনে কম দেওয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ বা অনুমোদনহীন পণ্য বাজারজাত করাসহ যেকোনো ধরনের অসাধু ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এসব অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জরিমানা আরোপ করে প্রতিকার দেওয়া হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্টদের পুনরায় প্রতারণা থেকে নিবৃত্ত করতে যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন ভোক্তারা।

বর্তমানে ভোক্তারা সহজেই স্মার্টফোনের মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারছেন। Google Play Store-এ থাকা ‘ভোক্তা অধিকার ও অভিযোগ’ অ্যাপ ব্যবহার করে অথবা DNCRP-র ওয়েবসাইটে গিয়ে অভিযোগ দাখিল করা যাচ্ছে। অভিযোগ দাখিল করতে হলে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, রিসিট ও প্রমাণস্বরূপ ছবি জমা দিতে হয়। অভিযোগটি অবশ্যই পণ্য ক্রয়ের ৩০ দিনের মধ্যে করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনটি বাস্তবায়নে সবার সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। অভিযোগ গ্রহণের প্রক্রিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত হয়েছে এবং DNCRP নিয়মিত ছোট ও বড় সব ধরনের মামলার নিষ্পত্তি করছে। একজন সাধারণ ভোক্তা মাত্র ১০০ টাকার প্রতারণার ক্ষেত্রেও আইনগত সহায়তা পাচ্ছেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতারণা কমাতে নিয়মিত মনিটরিং, জরিমানা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে জনসচেতনতা ও ভোক্তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এই আইন পুরোপুরি কার্যকর করা সম্ভব নয়।
 

মারিয়া

আরো পড়ুন  

×