ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যে ৫টি আমলে পাবেন পূর্ণ হজের সওয়াব!

প্রকাশিত: ০০:২১, ২ জুন ২০২৫; আপডেট: ০০:২৯, ২ জুন ২০২৫

যে ৫টি আমলে পাবেন পূর্ণ হজের সওয়াব!

হজে আর্থিক ও কায়িক শ্রমের সমন্বয় রয়েছে, অন্য কোনো ইবাদতে যা একসঙ্গে পাওয়া না। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ পবিত্র হজ পালনে সৌদি গমন করেন। সেখানে তারা আল্লাহ প্রেমের পাঠ চুকিয়ে রাসুল প্রেমের ষোলকলা পূর্ণ করেন। যাদের হজ অথবা ওমরাহ পালনে যাওয়ার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য মহানবী (সা.) এমন কিছু পথ বের করে দিয়েছেন, যেগুলো দ্বারা তারা কবুল হজ ও ওমরাহর সওয়াব পেয়ে যেতে পারে। আমলগুলো হলো-

 

১. ফরজ নামাজের পর তাসবিহ পাঠ

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘দরিদ্র লোকেরা রাসুল (স.)-এর নিকট এসে বলল, সম্পদশালী ব্যক্তিরা বেশি সওয়াব এবং জান্নাত নিয়ে যাচ্ছে! আমরা যেমন নামাজ পড়ি; তারাও পড়ে! আমরা যেমন রোজা রাখি; তারাও রাখে! কিন্তু তাদের রয়েছে অতিরিক্ত সম্পদ; ফলে তারা হজ করতে পারে, ওমরা করতে পারে, জিহাদে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সদকাও দিতে পারে! নবীজি (স.) তাদেরকে বললেন- 

আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল শিখিয়ে দেব না; যা করলে তোমরা অগ্রগামীদের স্তরে পৌঁছে যাবে এবং যারা তোমাদের পেছনে তারা তোমাদের স্তরে পৌঁছতে পারবে না, তোমরা হবে শ্রেষ্ঠতম মানব, তবে অন্য কেউ এটি করলে সেও তোমাদের মতো হয়ে যাবে। আমলটি হলো, প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩বার করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর পাঠ করবে।’ (সহিহ বুখারি: ৮০৭, সহিহ মুসলিম: ১৬৭৪)

উল্লেখ্য, ৩৩বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪বার আল্লাহু আকবর পড়ার যে আমলটি প্রসিদ্ধ, সেটিও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এবং এরও অনেক ফজিলত আছে। (সূত্র: সহিহ মুসলিম: ৫৯৬; তিরমিজি: ৩৪১২)

২. ফজরের পর মসজিদে সূর্যোদয় পর্যন্ত জিকির অতঃপর দু'রাকাত নামাজ আদায়

হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করল, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত মসজিদে বসে আল্লাহর জিকির করল, এরপর দু রাকাত নামাজ আদায় করল, সে ব্যক্তি হজ ও ওমরার সওয়াব নিয়ে ফিরল।’ (সুনানে তিরমিজি: ৫৮৬) হাদিসটি হাসান।

৩. দীন শিখতে বা শেখাতে মসজিদে যাওয়া

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে গেল কোনো ভালো কথা শিখা বা শেখানোর উদ্দেশ্যে, সে পরিপূর্ণরূপে হজ আদায়কারী ব্যক্তির মতো সওয়াব লাভ করবে।’ (তাবারানি: ৭৪৭৩) আল্লামা নুরুদ্দিন হায়সামি (রহ.) বলেন, এর সনদ সহিহ। (মাজমাউজ জাওয়াইদ, ১/১২৩, হাদিস: ৪৯৯)

৪) মা-বাবার সেবা এবং তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার

হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি নবীজি (স.)-এর নিকট এসে বলল, আমি জিহাদে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। নবীজি প্রশ্ন করলেন, তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন? লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। প্রত্যুত্তরে নবীজি বললেন, তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট জিহাদে যেতে না পারার অপারগতা বা ওজর পেশ করো। এভাবে যদি করতে পারো এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন, তবে তুমি হজ, ওমরা এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর এবং মায়ের সেবা করো।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ১৩৩৯৯) হায়সামি (রহ.) বলেন, হাদিসটি সহিহ।

৫. ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতে আদায়

আবু উমামা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (স.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করল, সে যেন হজ করে আসল। আর যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করতে মসজিদে গেল, সে যেন ওমরা করে ফিরল।’(তাবারানি: ৭৫৭৮) হাদিসটি হাসান।

 

 

সূত্রঃ https://youtu.be/WqBKXafBr0Y?si=bmqwmaYPRUwgBLgM

রিফাত

×