ছবি: সংগৃহীত
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে মাওবাদী সহিংসতার ঘটনা ছিল ১,৯৩৬টি, যা ২০২৪ সালে নেমে এসেছে মাত্র ৩৭৪টিতে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিকবার জানিয়েছেন যে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যেই দেশ থেকে মাওবাদ দমন করা হবে, এবং এ লক্ষ্যে একটি বড় অগ্রগতি ঘটে এ মাসের শুরুতে ছত্তীশগড়ে সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ২৭ জন মাওবাদী নিহত হলে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন শীর্ষ নেতা নাম্বালা কেশবরাও ওরফে বসবরাজু, যার মাথার দাম ছিল ১.৫ কোটি রুপি।
এনডিটিভি -এর হাতে পাওয়া তথ্য বলছে, ১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া মাওবাদী আন্দোলন এখন ইতিহাসে ঠাঁই নিতে চলেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে ১,৯৩৬টি সহিংসতার ঘটনা থেকে ৮১% হ্রাস পেয়ে ২০২৪ সালে তা ৩৭৪-এ নেমেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলার সংখ্যাও কমেছে নাটকীয়ভাবে: ২০১৩ সালে যেখানে ১২৬টি জেলা মাওবাদী-প্রভাবিত ছিল, তা ২০২১ সালে কমে দাঁড়ায় ৭০-এ এবং এই বছরের এপ্রিল নাগাদ তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৮ জেলায়।
মৃত্যুর হারেও হ্রাস: ২০১০ সালে মাওবাদী সহিংসতায় ৭২০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছিল। ২০১৯ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫০-তে এবং ২০২৪ সালে ছিল ১৩১ জন (যদিও ২০২৩ সালে এটি ছিল ১০৬ জন)। এ বছর মার্চ পর্যন্ত ১৯ জন বেসামরিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বেসামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মিলিত মৃত্যুর সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ১,০০৫, যা ২০২৪ সালে ১৫০-তে নেমে এসেছে, ৮৫% হ্রাস।
অবকাঠামোগত আক্রমণেও বড় ধাক্কা: রেললাইন, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, মোবাইল টাওয়ার, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাস্তা ও স্কুলে হামলার ঘটনা ২০১০ সালে ৩৬৫ থেকে কমে ২০১৭ সালে ৭৫, আর ২০২৪ সালে তা মাত্র ২৫টিতে পৌঁছেছে।
মাওবাদীদের মৃত্যু ও আত্মসমর্পণ: ২০২৪ সালের প্রথম কয়েক মাসেই ১৫০-র বেশি মাওবাদী নিহত হয়েছে। ২০২৩ সালে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৮০ এবং ২০২২ সালে ২৯০।
এই মাসের শুরুর দিকে ছত্তীশগড়ের নারায়ণপুরে সংঘটিত সংঘর্ষের পর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ বলেন, “গত তিন দশকে প্রথমবারের মতো সিপিআই (মাওবাদী)-এর একজন সাধারণ সম্পাদক নিহত হয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, “অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্ট” সম্পন্ন হওয়ার পর ছত্তীশগড়, তেলেঙ্গানা ও মহারাষ্ট্রে মোট ৫৪ জন নকশাল ধরা পড়েছে এবং ৮৪ জন আত্মসমর্পণ করেছে। “মার্চ ৩১, ২০২৬-এর মধ্যে নকশালবাদ নির্মূল করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মোদি সরকার,” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শহীদ
