
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ) জানালেন, মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারত অন্তত একটি যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। সিঙ্গাপুরে শাংরি-লা ডায়ালগ নিরাপত্তা সম্মেলনের সময় জেনারেল অনিল চৌহান বলেন, সাম্প্রতিক পাকিস্তানের সঙ্গে চলা চার দিনের সামরিক সংঘর্ষে ভারতের বিমান বাহিনী শুরুতে কিছু ক্ষতি স্বীকার করেছে।
তবে ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য দেননি তিনি। ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এসব ক্ষতি কেন হলো এবং তার পর আমরা কী করব,’ শনিবার (৩১ মে) রয়টার্সকে বলেন তিনি।
মে মাসের শুরুতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ৪ দিনব্যাপী সংঘর্ষ হয়েছিল, যা ১৯৯৯ সালের পর সবচেয়ে বড় উত্তেজনা ছিল। ১০ মে মধ্যরাতে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। দুইপক্ষের রকেট, ড্রোন ও আর্টিলারির আঘাতে ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন, তবে নিহতের সংখ্যা নিয়ে উভয় পক্ষের দাবি ভিন্ন।
ভারত বলেছে, পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় তাদের ‘সুনির্দিষ্ট হামলায়’ ১০০-এর বেশি ‘সন্ত্রাসবাদী’ নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, ওই হামলায় ৩০-এর বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
অপরদিকে, নয়া দিল্লির দাবি, পাকিস্তানের হামলায় ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর অঞ্চলে প্রায় ২৪ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন।
এই সংঘর্ষ শুরু হয় ২২ এপ্রিল পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর এক হামলার পর, যেখানে ২৬ জন নিহত হন। ভারত পাকিস্তানকে এর জন্য দায়ী করেছে, যা ইসলামাবাদ অস্বীকার করে।
পাকিস্তান দাবি করেছিল তারা অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি ছিল রাফাল যুদ্ধবিমান। কিন্তু জেনারেল চৌহান শনিবার এটি ‘সম্পূর্ণ ভুল’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারতের অন্তত একটি বিমান অবশ্যই হারিয়েছে।
‘গুরুত্বপূর্ণ হলো শুধু বিমান ভূপাতিত হওয়া নয়, কেন তা ভূপাতিত হলো,’ তিনি ব্লুমবার্গ টিভিকে বলেছিলেন।
যুদ্ধবিরতির পর ১১ মে ভারতের এয়ার মার্শাল একেএ ভারতী জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের সব পাইলট ঘরে ফিরে এসেছে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কিছু ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক।’
চৌহান জানান, যুদ্ধের প্রথম দিন বিমান বাহিনী কিছু ক্ষতি স্বীকার করায় তারা কৌশল পরিবর্তন করে, পরে ৭, ৮ ও ১০ মে বড় আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান ঘাঁটিতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়।
চৌহান বলেন, “যদিও যুদ্ধ থেমে গেছে, ভারত সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, পাকিস্তান থেকে আর কোনো সন্ত্রাসী হামলা হলে তারা ‘নির্ভুল ও কঠোর’ জবাব দেবে। তাই আমাদের সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে।”
চৌহান আরও জানান, পাকিস্তান চীনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও সংঘর্ষ চলাকালীন ভারতের উত্তরে কোনো অস্বাভাবিক চীনা সামরিক কার্যকলাপ দেখা যায়নি।
চীন হয়তো পাকিস্তানের কাছে স্যাটেলাইট ছবি বা গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ধরনের ছবি এখন বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া যায়, তাই চীন কিংবা অন্য কোথাও থেকে কেনা সম্ভব।’
সূত্র: আল জাজিরা।
রাকিব