ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হামাস কেন বদলাতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:১১, ২ জুন ২০২৫

হামাস কেন বদলাতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব?

ছবি: সংগৃহীত

গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে পাঠানো সাম্প্রতিক প্রস্তাবকে ‘সাহসী ও ইতিবাচক’ হিসেবে স্বীকার করেছে হামাস। তবে গোষ্ঠীটি দাবি করছে, এটি আগের সম্মত চুক্তি থেকে কিছুটা আলাদা এবং এতে যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধের কোনো নিশ্চয়তা নেই।

আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামাস নেতা বাসেম নাইম বলেন, "আমরা প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছি, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত সংযুক্ত করেছি। যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধের নিশ্চয়তা না থাকায় আমাদের উদ্বেগ রয়েছে।"

হামাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আগের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, ইসরায়েল অতীতে একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে ও সহায়তা বন্ধ করেছে। তাই তারা চায়, যুদ্ধবিরতির সময়সীমার মধ্যেই সব বন্দির মুক্তির প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে হোক এবং নির্দিষ্ট আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করা থাক।

হামাসের মূল দাবি:

  • যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধের রূপরেখা ও সময় নির্ধারণ
  • ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার
  • গাজায় নিয়মিত ত্রাণ প্রবাহ চালু রাখা
  • গাজা শাসনের জন্য একটি ‘স্বাধীন টেকনোক্র্যাট সরকার’ গঠনের সুযোগ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া
প্রস্তাবে হামাসের শর্ত যুক্ত করাকে "সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য" বলে মন্তব্য করেছেন স্টিভ উইটকফ। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ তিনি বলেন, “এই পদক্ষেপ কেবল আলোচনাকে পিছনে ঠেলে দেয়। হামাসকে আমাদের গৃহীত প্রস্তাব মানতে হবে, যাতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মধ্যে অর্ধেক জীবিত ও অর্ধেক নিহত বন্দিরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরতে পারে।”

ইসরায়েল সরকার জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব সমর্থন করেছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, “হামাসের প্রতিক্রিয়া অগ্রহণযোগ্য এবং আলোচনাকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “হামাস পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।”

গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে ৫৪,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি। মার্চ থেকে সম্পূর্ণ অবরোধের ফলে গাজায় দুর্ভিক্ষ ও চরম অপুষ্টির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, বিশ্বের একমাত্র অঞ্চল হিসেবে এখন পুরো গাজা ভূখণ্ডই দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।

৩১ মে দক্ষিণ গাজার রাফাহ ও নেটজারিম করিডোর এলাকায় ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হয়।

হামাসের আশঙ্কা, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির সুযোগ নিয়ে ফের আক্রমণ চালাতে পারে। তাই তারা একটি সম্মানজনক ও টেকসই সমাধান চায়।

মুমু

×