
ছবি: সংগৃহীত
গাজার অবরুদ্ধ মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিচ্ছে গ্রেটা থুনবার্গের মানবতার জাহাজ ‘ম্যাডলিন’। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) উদ্যোগে যাত্রা শুরু করা এই জাহাজটি গাজা উপত্যকার উদ্দেশে ২ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রপথে ছুটে চলেছে। বহন করছে জরুরি খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী, শিশুদের জন্য দুধ, ডায়াপার, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, নারীদের স্বাস্থ্য পণ্য, ক্রাচ ও কৃত্রিম অঙ্গসহ জীবন বাঁচানো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।
জাহাজটির নামকরণ করা হয়েছে গাজার প্রথম ও একমাত্র নারী মৎস্যজীবী ম্যাডলিনের নামে। এটি ইতালির সিসিলির কাটানিয়া বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছে ১ জুন। সর্বশেষ ৩ জুন জিএমটি বিকেল ৩টার দিকে জাহাজটি ছিল সিসিলি থেকে ৬০০ কিমি দূরে।
কে কে আছেন এই মানবতার মিশনে?
এই জাহাজে রয়েছেন ১২ জন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী, যারা সকলেই নিরস্ত্র এবং অহিংস প্রতিরোধের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। যাত্রীদের তালিকায় রয়েছেন:
- গ্রেটা থুনবার্গ (সুইডেন) – বিশ্বখ্যাত জলবায়ু আন্দোলনকর্মী
- রিমা হাসান (ফ্রান্স-ফিলিস্তিনি) – ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য
- ইয়াসেমিন আচার (জার্মানি)
- বাতিস্ত আন্দ্রে, ওমর ফাইয়াদ, পাস্কাল মউরিয়েরাস, ইয়ানিস মুহামদি, রেভা ভিয়ার্ড (ফ্রান্স)
- থিয়াগো অ্যাভিলা (ব্রাজিল)
- সুয়াইব ওর্দু (তুরস্ক)
- সের্জিও তোরিবিও (স্পেন)
- মার্কো ভ্যান রেনেস (নেদারল্যান্ডস)
অবরোধ, ক্ষুধা আর মৃত্যুর মুখে গাজা
গত ২ মার্চ থেকে গাজায় সহায়তা প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। ফলে ইতিমধ্যেই বহু শিশু অনাহারে মারা গেছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোর মতে, গাজার ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে রয়েছে, যা কার্যত একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিচ্ছে। আইপিসি’র (Integrated Food Security Phase Classification) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ অনাহারের মুখোমুখি।
এর আগেও গাজায় সাহায্য পাঠানোর উদ্যোগে আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েল। গত ২ মে মাল্টার উপকূলে ‘কনসায়েন্স’ নামের একটি ফ্লোটিলা জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়ে জাহাজে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। ২০১০ সালে ‘মাভি মারমারা’ নামে আরেকটি মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজে ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালিয়ে ৯ জন তুর্কি কর্মীকে হত্যা করেছিল।
সহায়তা কেন্দ্র ও গণহত্যার অভিযোগ
গাজায় নতুনভাবে চালু করা ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র ইতোমধ্যে বিশৃঙ্খলা ও রক্তাক্ত ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রে গুলিবর্ষণে অন্তত ১০২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। গাজার সরকার একে ‘ইচ্ছাকৃত গণহত্যা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা।
রাকিব