ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মেজর সিনহাকে ডাকাত সাজিয়ে হত্যার পরিকল্পনা ছিল সেদিন!

প্রকাশিত: ১১:৩০, ২ জুন ২০২৫

মেজর সিনহাকে ডাকাত সাজিয়ে হত্যার পরিকল্পনা ছিল সেদিন!

ছবি:সংগৃহীত

তথ্যচিত্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারে অবস্থান করছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। তার সঙ্গে ছিলেন সহকর্মী শাহিদুল ইসলাম সিফাত। নিজস্ব প্রাইভেট কারে করে তাঁরা রওনা দেন এবং মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে পৌঁছান টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন একটি স্থানে।

 

 

গাড়ি পার্ক করে তাঁরা ওঠেন স্থানীয় একটি পাহাড়ের দিকে, যেটি ‘মইন্না পাহাড়’ নামে পরিচিত। পথিমধ্যে তিনি স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ সৈয়দ করিমের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে দেখা হয় কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত মাথাভাঙ্গা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ জহিরুল ইসলামের সঙ্গেও।

সন্ধ্যার পর, স্থানীয় মারিশপুনিয়া মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় যে পাহাড়ে ‘ডাকাতের আক্রমণ’ হয়েছে। ইমাম হাফেজ জহিরুল ইসলাম জানান, তাকেও তার মসজিদে একই ধরনের ঘোষণা দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। পরে জানা যায়, ডাকাত সংক্রান্ত এই ভুয়া ঘোষণার পেছনে স্থানীয় তিন ব্যক্তি, নুরুল আমিন, নিজামউদ্দিন ও মোহাম্মদ আইয়াজ জড়িত ছিলেন। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করছিলেন এবং মেজর সিনহার গতিবিধির উপর নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন।

পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে মেজর সিনহা বিকল্প পথ দিয়ে পাহাড় থেকে মেরিন ড্রাইভে নেমে আসেন এবং কক্সবাজারের দিকে রওনা হন। তবে তাঁর অবস্থান দ্রুতই পুলিশকে জানিয়ে দেয় ওই তিন সোর্স।

 

 

রাত আনুমানিক ৯টা ২০ মিনিটে মেজর সিনহার প্রাইভেট কার শ্যামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে পৌঁছায়। সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি রাস্তা ব্যারিকেড করে থামান মেজর সিনহার গাড়ি।

চেকপোস্টের একপাশে অবস্থিত বায়তুন নূর জামে মসজিদের খতিব ও মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ মাওলানা শহিদুল ইসলাম জানান, চেকপোস্টে চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ শুনে তিনি ছাদে উঠে আসেন এবং সেখান থেকেই প্রত্যক্ষ করেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মেজর সিনহার মাটিতে লুটিয়ে পড়ার দৃশ্য।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে আসে, মেজর সিনহাকে গুলি করার পরও প্রায় আধা ঘণ্টা তিনি সেখানেই পড়ে ছিলেন। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছান টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ ছিল আরও অমানবিক। ওসি প্রদীপ ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা গুলিবিদ্ধ মেজর সিনহার শরীরকে নির্মমভাবে পদদলিত করেন, যা দেখে মনে হয়েছিল তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাসও থেমে গেছে।

 

 

সূত্র:https://youtu.be/fxdcZuazjO8?si=7b0JpmerjQhuUNeP

আঁখি

×