
ছবি: সংগৃহীত
বিদেশ ভ্রমণের জন্য ভিসা পাওয়া এখন আর আগের মতো সহজ নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য একের পর এক জনপ্রিয় গন্তব্য দেশ ভিসা সীমিত বা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। এতে চিকিৎসা, ব্যবসা কিংবা বিনোদনের উদ্দেশ্যে বিদেশগামীদের ভ্রমণ পরিকল্পনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসা চলতি বছরের জুলাই থেকে বন্ধ। ফলে চিকিৎসার জন্য যারা প্রতিবেশী দেশটিকে ভরসা করতেন, তাদের জন্য বিকল্প গন্তব্য হয়ে উঠেছিল থাইল্যান্ড। পাতায়া, ফুকেট, কিংবা রাতের ব্যাংকক এখনো জনপ্রিয় থাকলেও দেশটিতে ভিসা পেতে এখন কমপক্ষে ৪৫ দিন সময় লাগছে, যা আগের তুলনায় অনেক দীর্ঘ।
একই পরিস্থিতি দুবাইয়ের ক্ষেত্রেও। মরু শহরটির বিশ্ববিখ্যাত স্থাপত্য, বিলাসবহুল হোটেল এবং বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধার জন্য বাংলাদেশিদের কাছে এটি বরাবরই আকর্ষণীয় ছিল। কিন্তু গত জুলাই থেকে সাধারণ বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য দুবাইয়ের ট্যুরিস্ট ভিসা কার্যত বন্ধ। যদিও দিনে ৩০ থেকে ৫০টি ভিসা দেওয়া হচ্ছে, তা মূলত বিজনেস বা অন্য ভিসা ক্যাটাগরিতে, সাধারণ ট্যুরিস্টদের জন্য নয়।
ভিয়েতনাম এক সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য ছিল। অনেকেই ভিয়েতনাম ঘুরে পাশের দেশ লাওস ও কম্বোডিয়াতেও বেড়িয়ে আসতেন। কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ভিয়েতনাম বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় আগে ‘অন-অ্যারাইভাল’ ভিসা সুবিধা থাকলেও এখন সেটিও বিলম্বিত। বাংলাদেশি নাগরিকদের এখন এই ভিসা পেতে দুই মাসেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। একই অবস্থা ফিলিপাইনেও। আগে যেখানে ১০ দিনের মধ্যে ভিসা মিলতো, এখন তা পেতে দেড় মাস সময় লাগছে।
এই ভিসা সংকটের পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ট্যুরিস্ট ভিসার অপব্যবহার। অনেকেই বৈধ ট্যুরিস্ট ভিসায় গিয়ে সেখানে অনাবাসী শ্রমিক বা অবৈধ অভিবাসী হয়ে থাকেন, যা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নিরাপত্তা ও অভিবাসন ব্যবস্থাকে বিঘ্নিত করছে।
ফলে এখন বছরে এক-দুইবারের ছুটি বা হানিমুনের মতো ভ্রমণ পরিকল্পনা করার আগে ভেবে দেখতে হচ্ছে—কোন দেশে যাওয়া যাবে, আর কোন দেশে যাওয়া অনিশ্চিত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ইমেজ উন্নয়ন এবং ভিসার অপব্যবহার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য বৈশ্বিক ভ্রমণের দুয়ার ধীরে ধীরে আরও সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে।
এসএফ