
ছবিঃ সংগৃহীত
১৫ জুলাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের জোয়ারে ভাসছে, দিনের শুরুতে আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ কর্তৃক হামলার শিকার হন আন্দোলনকারীরা। এর ভিত্তিতে ১৫ তারিখ সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম তার ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আন্দোলনকারী এবং সারা দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে একটি বার্তায় বলেন, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক মর্মান্তিক দিন ঘটে গেছে। কোটা সংস্কারের যে যৌক্তিক দাবি নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি, সেই দাবির অংশ হিসেবে আজও আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসীরা, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে আমাদের ওপর আক্রমণ করেছে।
তারা লাঠি-শোঠা, ইট-পাটকেল নিয়ে আমাদের নারী শিক্ষার্থী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও প্রকৃত সংখ্যা এখনো জানা যায়নি। ঢাকা মেডিকেলে এক মর্মান্তিক অবস্থা বিরাজ করছে—করিডোরে করিডোরে আহত ছেলেমেয়েরা পড়ে আছে। সেখানেও চিকিৎসার কোনো যথাযথ ব্যবস্থা নেই। এমনকি ইমার্জেন্সি গেট পর্যন্ত তারা আক্রমণ করেছে, বলেন তিনি।
আন্দোলনের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে আহ্বান জানাবো, যদি এবার আমরা হেরে যাই, তাহলে আর কোনোদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো না। আমরা একটি ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছি—কোটা সংস্কারের জন্য। এই আন্দোলনের জন্য যদি আজ আমাদের জীবন দিতে হয়, তবে তাও দিতে হবে। আজ যদি আমরা হেরে যাই, যদি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে আর কোনোদিন পারবো না।
সকলকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা প্রস্তুত হোন। আজ আপনারা ক্যাম্পাস এলাকার আশপাশে অবস্থান করুন। গ্রুপ করে সংগঠিত হোন। যারা ঢাকার বাইরে আছেন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে অবস্থান করছেন, তাদের সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা ক্যাম্পাসে চলে আসুন। এই ভিডিওর শেষে কিছু নম্বর দেওয়া হবে—সেগুলোর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের কেন্দ্রীয় মিছিল বের হবে। ইতোমধ্যে অবস্থান নেওয়া শুরু হয়েছে। ছাত্রীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে—আপনারা হলে হলে অবস্থান নিন, মিছিল শুরু করুন। ছাত্ররা, আপনারা হলগুলো দখল নিন, যাতে কোনো সন্ত্রাসী হলের ভেতরে ঢুকতে না পারে। সবার উচিত হলে অবস্থান গ্রহণ করা। সায়েন্সের হলগুলোতে আমাদের ভাইয়েরা ইতিমধ্যে অবস্থান নিয়েছে, তারা শিগগিরই মিছিল শুরু করবে। তবে কেউ বিচ্ছিন্নভাবে, সমন্বয়হীনভাবে কোনো প্রতিরোধে যাবেন না। আমাদেরকে একত্রিত হয়ে, একতাবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
আর এ প্রতিরোধই হয়ে উঠলো দূর্গ। প্রতিরোধ থেকে শুরু করে পরাজিত করার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীকে নামানো হলো। জনতার জয় হলো, জয় হলো প্রতিবাদী কণ্ঠের।
মারিয়া