ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

ভারত বিরোধী মনোভাব নিয়ে আগালে কোনো কিছু সম্ভব হবে না: ড. আলী আকবর

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১০ মে ২০২৫

ভারত বিরোধী মনোভাব নিয়ে আগালে কোনো কিছু সম্ভব হবে না: ড. আলী আকবর

অধ্যাপক ড. আলী আকবর

ভারত বিরোধী মনোভাব নিয়ে আগালে কোনো কিছু সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ড. আলী আকবর।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এখনও অনেকাংশেই আবেগনির্ভর—বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে। “আমরা স্বাধীনতার পর থেকেই ইস্যুভিত্তিক কূটনৈতিক আলোচনা না করে ইমোশনালভাবে বিষয়গুলো ডিল করে আসছি। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে কিছু সংকট থেকেই যাচ্ছে।”

অধ্যাপক আলী আকবর মনে করেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে হবে। “ভারত আমাদের প্রতিবেশী। তাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ইস্যুভিত্তিক বার্গেনিং করতে হবে।”

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, কিছুদিন আগে ভারতের গুজরাটে ১২৫ জন মুসলিম নাগরিককে ‘বাংলাদেশি’ বলে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দেখা যায়, তারা আসলে ভারতের নিজস্ব নাগরিক। “ভারতের কিছু মিডিয়া সম্পর্ককে উত্তপ্ত করতে এমন গুজব ছড়ায়,” বলেন অধ্যাপক।

ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সত্য হারিয়ে যায়। “সোশ্যাল মিডিয়া ও কিছু মূলধারার গণমাধ্যমও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ায়। পাকিস্তানের পুরনো ভিডিওকেও ভারতের যুদ্ধবিমানের ধ্বংস হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।”

আলোচনায় উঠে আসে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন ও বাংলাদেশের অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গ। অধ্যাপক আলী আকবর মনে করেন, “একটি রাজনৈতিক সরকার তার নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য স্থির করে এবং তা বাস্তবায়নে কাজ করে। কিন্তু একটি ইন্টারিম সরকার সেইভাবে কূটনীতি পরিচালনা করতে পারে না।”

তিনি উল্লেখ করেন, প্রধান উপদেষ্টার ব্যাংকক বৈঠক সত্ত্বেও ভারত বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা স্থগিত করেছে, যা সম্পর্কের শীতলতার ইঙ্গিত।

অধ্যাপক আরও বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কেও জটিলতা বেড়েছে। “রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা বুঝতে পারছি না, কার সঙ্গে কথা বলব—সরকারের সঙ্গে, নাকি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে?” তিনি জানান, গত এক বছরে ১ লাখ ১৩ হাজারের বেশি নতুন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে, যা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর ৩৪ সদস্যকে বাংলাদেশ থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ফেরত পাঠানোর ঘটনাও এই জটিলতার ইঙ্গিত দেয়।

নুসরাত

×