ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

ভারত-পাকিস্তান ডগ ফাইট, কোন নজরে দেখছে বিশ্ব!

প্রকাশিত: ১৪:৪৭, ১০ মে ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান ডগ ফাইট, কোন নজরে দেখছে বিশ্ব!

ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাত শুধু এই দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং এটি অন্যান্য দেশের সামরিক বাহিনীর জন্যও লেখাপড়া ও গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে দুই দেশের বিমান বাহিনীর মধ্যে আকাশযুদ্ধ বা ডগফাইটে কমপক্ষে দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়, যা বিশ্বজুড়ে সামরিক বিশ্লেষকদের নজর কেড়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় ভূপাতিত যুদ্ধবিমান দুটি ছিল ফ্রান্সে নির্মিত রাফাল জেট, আর পাকিস্তানের ব্যবহৃত যুদ্ধবিমানগুলো ছিল চীনে তৈরি। এই ঘটনাটি চীনের যুদ্ধবিমান শিল্পের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

 

 

এই সংঘাতে পাইলটদের দক্ষতা, যুদ্ধবিমান ও আকাশ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কার্যকারিতা বিশ্লেষণের সুযোগ পাচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিমান বাহিনী। উন্নত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দুই বাহিনীর মধ্যে এ ধরনের সংঘর্ষ বিরল, যা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তাইওয়ান ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতির জন্য। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এই আকাশযুদ্ধের কৌশলগত বিশ্লেষণ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে যে পাকিস্তান ব্যবহার করেছে চীনের পিএল-১৫ এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এবং ভারতীয় বাহিনী ব্যবহার করেছে ইউরোপীয় সংস্থা এমবিডিএর তৈরি রাডার গাইডেড মিটিওর ক্ষেপণাস্ত্র। যদিও উভয় দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের নাম প্রকাশ করেনি, এসব তথ্য এখনো নিশ্চিত নয়।

 

 

সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই আকাশযুদ্ধের কৌশল, প্রযুক্তি এবং অস্ত্রের কার্যকারিতা সম্পর্কে যতটা সম্ভব তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবেন তারা। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, সম্ভবত এই যুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বের সর্বাধুনিক অস্ত্রের মুখোমুখি হয়েছে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। একজন প্রতিরক্ষা শিল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, “পিএল-১৫ একটি চ্যালেঞ্জিং অস্ত্র, যা মার্কিন সামরিক বাহিনীকেও উদ্বিগ্ন করে রেখেছে।”

এই ঘটনার পর ফ্রান্সের রাফাল নির্মাতা ডাসল্ট অ্যাভিয়েশন এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুতকারী এমবিডিএ কনসোর্টিয়াম কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি, আংশিকভাবে ফ্রান্সে সরকারি ছুটি থাকায়। ফলে পশ্চিমা বিশ্লেষক ও প্রতিরক্ষা সূত্রগুলো এখনো অনেক তথ্য জানতে পারেনি। বিশেষ করে মিটিওর ক্ষেপণাস্ত্র আদৌ ব্যবহৃত হয়েছে কি না বা সংশ্লিষ্ট পাইলটদের প্রশিক্ষণের মান কেমন ছিল, এসব প্রশ্ন এখনো অনুত্তরিত রয়ে গেছে।

 

 

বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তিগত পারফরমেন্স আর যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশলগত দিকগুলো পৃথক করা কঠিন। কোন অস্ত্র কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে আর কোনটি হয়নি—তা বিশ্লেষণ করা হবে, তবে যুদ্ধ সবসময়ই অনিশ্চয়তায় পরিপূর্ণ থাকে। ইউক্রেন যুদ্ধে যেমন মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের অস্ত্রের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করেছে, তেমনি ভারত ও পাকিস্তানও তাদের অস্ত্র সরবরাহকারী ইউরোপীয় ও চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে এসব তথ্য সরবরাহ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আঁখি

×