
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ
সীতাকুণ্ডে জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর প্রতিবাদ সমাবেশে হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। এ সময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ১২ জামায়াত নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থাই গুরুতর। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুই দিন আগে জঙ্গল সলিমপুর এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জামায়াতের নেতা শহিদুল ইসলামের উপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। হামলার প্রতিবাদে ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে শুক্রবার (৯ মে) এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত হন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী, সীতাকুণ্ড উপজেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি কুতুবুদ্দিন শিবলীসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
এ সময় হঠাৎ একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী প্রতিবাদ সভায় অতর্কিত হামলা করে। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় প্রতিবাদ সভা। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয় জামায়াতের ১২ জন নেতা-কর্মী। অবরুদ্ধ করা হন আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতাকর্মীকে। এ সময় উপজেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি কুতুব উদ্দিন শিবলীও আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন জামায়াত নেতা মো: আলী, আবদুস সালাম ও শহীদুল ইসলাম।
উত্তর জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার সিদ্দিকী চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয় রোকন মেম্বারের নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়। হামলায় নেতৃত্ব দেন রিদওয়ান। তার সাথে ছিলেন ফারুক, আমজাদ, লাল বাদশাহ ও লেদা সহ একদল সন্ত্রাসী। হামলা চলাকালীন তারা রোকন মেম্বারের নাম ধরে স্লোগান দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। অবরুদ্ধ অবস্থায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমাদেরকে উদ্ধার না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতো।’
আনোয়ার সিদ্দিক বলেন, ‘অবিলম্বে জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে। হামলার ঘটনায় মামলা নিতে হবে এবং চিহ্নিত সন্ত্রাসীদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। জঙ্গল সলিমপুরের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। আমরা যেকোন মুহূর্তে সেখানকার জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উপর পুনরায় হামলার আশঙ্কা করছি।’
এই বিষয়ে জানতে রোকন মেম্বারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আহত জামায়াত নেতা কুতুব উদ্দিন শিবলী বলেন, ‘জঙ্গল সলিমপুর এস এস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জামায়াত নেতা শহীদুল ইসলামকে গত বুধবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সন্ত্রাসীরা উপর্যুপরি হামলা করে। ওই হামলার প্রতিবাদে আজ জামায়াতের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে সেখানে হামলা করে সন্ত্রাসীরা।’
ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: সোহেল রানা বলেন, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় বিএনপিরও একটি প্রস্তুতি সভা চলছিল। সে সময় বিএনপি নেতারা জামায়াতের সমাবেশকে আওয়ামী লীগের সমাবেশ মনে করে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে বিএনপি নেতা রিদওয়ান। পরে খবর পেয়ে আমরা অবরুদ্ধ জামায়াত নেতা-কর্মীদের উদ্ধার করি।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মজিবুর রহমান। সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘জঙ্গল সলিমপুরে জামায়াতের সমাবেশে হামলার ঘটনা শুনে আমরা সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি। অবরুদ্ধ নেতা-কর্মীদের উদ্ধার করেছে।’
মিরাজ খান