
ছবিঃ সংগৃহীত
পদ্মা সেতু প্রকল্পের পূর্বপাশে অবস্থিত কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষা বাঁধের প্রায় ২ কিলোমিটার অংশ ভাঙনের মুখে পড়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পাড় ভেঙে বাঁধের কাছে চলে আসায় ইয়ার্ডটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ পদ্মা সেতুর ভাটির দিকে, নদীর ডান তীরে, ২০১১-১২ অর্থবছরে ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। তবে দীর্ঘদিনের ব্যবহারে এবং নদীর স্রোতের তীব্রতা বাড়ায় বাঁধের নিচের মাটি সরে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে গভীরতা, যা বর্তমানে ভাঙনের অন্যতম কারণ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদীর তলদেশে মাটি সরে যাওয়ায় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় গভীরতা তৈরি হয়েছে, আর বাকি অংশেও ধীরে ধীরে দেখা দিচ্ছে ভাঙন। এ অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
বাঁধটি ভেঙে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা, পালেরচর, মঙ্গল মাঝিরঘাট বাজার, আলমখার কান্দি ও কালাই মোড়ল কান্দি এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতিদিনই মাটির চূড়া ভেঙে নদীতে পড়ছে। এক নারী বলেন, "ছেলেমেয়েগুলা থাকি হে, ওই বাদ ছুটে গেছে গা। মনে করেন, থাকার আর কোনো কায়দা নাই। বর্ষা আইতাছে, আমরা কেমনে থাকমু? আমাগো রাতেই ঘুম নাই।"
স্থানীয়দের দাবি, এই রক্ষা বাঁধকে আরও শক্তিশালী করে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হোক। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, টেকসই বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। তারা আশা করছে, চলমান প্রকল্পের সঙ্গে এই বাঁধ উন্নয়ন কাজকে অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত স্থায়ী সমাধানে যাওয়া সম্ভব হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, "যেহেতু এ বাঁধের নির্মাণ কাজ ১০-১৫ বছর আগের, বর্তমান বাস্তবতায় এটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই আমরা একে আমাদের চলমান প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে স্থায়ীভাবে সংস্কার করার পরিকল্পনা নিয়েছি।"
মাঝিরঘাট বাজার ও পদ্মা সেতু কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মারিয়া