
দীর্ঘদিনের অবহেলা অসম্মান ও বঞ্চনার ইতিহাস পেছনে ফেলে ভালো আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা
দীর্ঘদিনের অবহেলা অসম্মান ও বঞ্চনার ইতিহাস পেছনে ফেলে ভালো আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। অস্ত্র হাতে লড়াই করে তাঁরা যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেই দেশ তাঁদের অবদানের কথা আজ এতকাল পর হলেও স্বীকার করছে। কুর্ণিশ করছে তাঁদের।
জাতীয়ভাবে কৃতজ্ঞতা জানানোর অংশ হিসেবে একাত্তরের বীরদের রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা, অর্থ ঋণ, সরকারি গণপরিবহনে যাতায়াতে ছাড়সহ বেশকিছু সেবা। খেতাবপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাচ্ছেন বাড়তি আরও কিছু সেবা। এসব কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিও অনেকটা পাল্টেছে। সম্মান ফিরে পেয়েছেন তাঁরা।
এর আগে দেশ স্বাধীন হওয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। মুক্ত স্বাধীন দেশে ফিরে এসে পরিবার পরিজন ভিটেমাটি কোনোকিছুই আগের অবস্থায় পাননি তাঁরা। কারও বাবাকে মেরে ফেলেছিল পাকিস্তানিরা। কারও মাকে। কারওবা বোনকে ধরে নিয়ে পাকিস্তানিদের বাঙ্কারে দিয়ে এসেছিল রাজাকাররা। ঘর বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নিজের ভিটায় বরণ করে নেওয়ারও কেউ ছিল না। বিপুল স্বপ্ন নিয়ে সদ্য রণাঙ্গন থেকে ফেরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যার যার কাজে ফিরে যাওয়ার সরকারি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ জাতীয় মিলিশিয়া গঠন করে সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এই পরিকল্পনা পরে আর আলোর মুখ দেখেনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন। নানা কারণে সেটির সুফল পাননি তৃণমূলের যোদ্ধারা। এ অবস্থায় শুরু হয় টিকে থাকার নতুন সংগ্রাম। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হলে মহাবিপর্যয় নেমে আসে দেশে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বিরোধীরা নতুন করে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে যায়।
অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এরপর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে দুর্বল করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। সে সময় ইতিহাস এমনভাবে বিকৃত করা হয় যে, বীর মুক্তিযোদ্ধারা আর বীর পরিচয়ে সামনে আসতে পারেননি। হিরো হয়ে সামনে থাকার পরিবর্তে আমজনতার মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ করে যেন ৯ বছর পেছনে পড়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। গ্রামের অতি সাধারণ পরিবার থেকে যুদ্ধে যাওয়া মুক্তিসেনারা সন্তান হিসেবে, স্বামী হিসেবে কিংবা বাবা হিসেবে চরম ব্যর্থ প্রমাণিত হন। সমাজের কাছেও গুরুত্ব হারান তাঁরা।
সে সময়ের পত্রপত্রিকা ঘেঁটে দেখা যায়, চরম দুরবস্থায় দিন কাটিয়েছেন একাত্তরের বীররা। তখন খবরের শিরোনাম ছিল ‘ঘর নেই, রিক্সা চালিয়ে জীবন কাটছে মুক্তিযোদ্ধার।’ ‘টাকা নেই, চিকিৎসা হচ্ছে না মুক্তিযোদ্ধার।’ ‘মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না মুক্তিযোদ্ধা। ছেলের লেখাপড়া বন্ধ।’ বিভিন্ন সময়ে এমন আরও অনেক নিষ্ঠুর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তবে ১৯৯৬ সালে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে একাত্তরের চেতনা বাস্তবায়নে নতুন করে কাজ শুরু হয়।
জানা যায়, এর অংশ হিসেবে খোঁজ খবর নেওয়া হয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়। ২০০০ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসে ৩০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া শুরু হয়। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অসচ্ছল ৪০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এই টাকা দিত সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
পরের বছর ২০০১ সালে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত-শিবিরকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কুঠারাঘাত হানলেও কৌশলী সে সরকার ওই বছরের ২৩ অক্টোবর প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এ মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুকূলে সবচেয়ে বেশি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার আওয়ামী লীগ অনেক বছর ধরে ক্ষমতায় থাকায় এর সুফল পাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধরাও।
সম্মানী ভাতা বিতরণ নীতিমালা অনুযায়ী, বর্তমানে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মাসে ২০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এর বাইরে বছরে ১০ হাজার টাকা করে দুটি উৎসব ভাতা, ২ হাজার টাকা করে বাংলা নববর্ষ ভাতা এবং ৫ হাজার টাকা করে বিজয় দিবস ভাতা দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। সব মিলিয়ে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা অন্য সুযোগ-সুবিধা বাদে বছরে ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। পাশাপাশি ৬৭৬ জনকে খেতাবপ্রাপ্ত ক্যাটাগরিতে সম্মানী ভাতা দিচ্ছে সরকার। বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারকে মাসে ৩০ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্তকে দেওয়া হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা করে।
যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যও রয়েছে সম্মানী ভাতা। শারীরিক অসামর্থ্য অনুযায়ী ৪টি ক্যাটাগরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ ভাতা পান। ৯৬-১০০ শতাংশ শারীরিক অক্ষমদের ‘এ’ শ্রেণি, ৬১-৯৫ শতাংশ অক্ষমদের ‘বি’ শ্রেণি, ২০-৬০ শতাংশ অক্ষমদের ‘সি’ শ্রেণি এবং ১-১৯ শতাংশ অক্ষমদের ‘ডি’ শ্রেণিভুক্ত করে সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়। ‘এ’ শ্রেণিভুক্তরা ৪৫ হাজার, ‘বি’ শ্রেণিভুক্তরা ৩৫ হাজার, ‘সি’ শ্রেণিভুক্তরা ৩০ হাজার এবং ‘ডি’ শ্রেণিভুক্তরা ২৫ হাজার টাকা মাসিক ভাতা পান। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা, মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছরের অক্টোবরে ২,৩৭,০৪৩ জন উপকারভোগীর অনুকূলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বাবদ ৩৮২ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার ১৬৫ টাকা প্রদান করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ ঋণ কর্মসূচির আওতায় সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা ঋণও দেওয়া হচ্ছে। এ ঋণ সুবিধা বিশেষ কাজে আসছে গ্রহীতাদের।
আছে রেশন সুবিধাও। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের ২২ হাজার সদস্যকে রেশন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। রেশন হিসেবে মাসে ৩৫ কেজি চাল, ৩০ কেজি আটা, ৫ কেজি চিনি, ৮ লিটার ভোজ্য তেল ও ৮ কেজি ডাল দেওয়া হয়।
যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ২২টি সুবিধা ভোগ করেন। শিক্ষা ভাতা হিসেবে দুই কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে প্রতিজন বার্ষিক এক হাজার ৬শ’ টাকা এবং বিবাহ ভাতা অনধিক দুই কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে জনের জন্য এককালীন ১৯ হাজার দুই টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বছরে দুটি ঈদে মূল ভাতার সমপরিমাণ অর্থ এবং ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর ৪৮০ টাকা করে প্রীতি ভোজের জন্য দেওয়া হয়।
বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসার বিষয়টিতে। বর্তমানে অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। চিকিৎসা ব্যয় বহন করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব বা সহজ হচ্ছে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সব সরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ এবং সরকার-নির্ধারিত ২৩টি বিশেষায়িত হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে খরচ বহন করা হয়। বিদেশে চিকিৎসার সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সরবরাহ করা হয় মন্ত্রণালয় থেকে।
অন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা চিকিৎসাসেবা নিতে গেলে উপজেলা হাসপাতালে বছরে ১০ হাজার, জেলা হাসপাতালে ২০ হাজার এবং বিভাগীয় হাসপাতালে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পান। জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা ও অনুমতি সাপেক্ষে ছাড় আরও বাড়তে পারে। এমন হলে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য বছরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় দিতে পারে।
বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে গেলে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বছরে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পান। চিকিৎসা চলাকালে আরও টাকার প্রয়োজন পড়লে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সুপারিশ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ক্রমে অতিরিক্ত অর্থ ছাড় দেওয়া হয়। মুমূর্ষু রোগীর জরুরি অপারেশন ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিবেচনা অনুযায়ী অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারিভাবে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৩০ হাজার ‘বীর নিবাস’ নির্মাণের কাজ চলছে এখন। ইতোমধ্যে ৫ হাজার নিবাস হস্তান্তর করা হয়েছে। একইভাবে অভিন্ন নক্সার সমাধি নির্মাণ প্রকল্প চালু আছে। সব বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধি এই এক নক্সায় হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে বড় সম্মানও দেখানো হয় মৃত্যুর পর। বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হলে তাঁর কফিন জাতীয় পতাকায় মুড়িয়ে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। দেওয়া হয় গান স্যালুট। বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ সম্মান দেখতে না পেলেও, গর্বে বুক ভরে ওঠে সন্তান আত্মীয় পরিজনের।
যাতায়াতের ক্ষেত্রেও কিছু সেবা নিশ্চিত করেছে সরকার। সরকারি যানবাহনে বিনা ভাড়ায় যাতায়তের করতে পারেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরীণ সব রুটে বছরে একবার ও আন্তর্জাতিক রুটে বছরে দুইবার বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের সুবিধা পান। হুইল চেয়ারে চলাচলকারী মুক্তিযোদ্ধাদের বছরে একবার ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের ব্যবস্থা, একটি মোবাইল এবং সর্বোচ্চ এক হাজার ৯শ’ টাকা পর্যন্ত মোবাইল বিল দেওয়া হয়। এ ছাড়াও পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে সড়ক ও মহাসড়কের টোল মওকুফ, ফেরিতে বিনা ভাড়ায় পারাপার, পর্যটন করপোরেশনের হোটেলে সপরিবারে দুই রাত এবং তিন দিন, ডাকবাংলোতে দুদিন অবস্থানের সুবিধা দেওয়া হয়।
সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসকারী বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের প্রতি সদস্য দৈনিক ১২৫ লিটার পানির বিল মওকুফ সুবিধা পান। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিজস্ব বাড়ির ১৫শ’ বর্গফুট পর্যন্ত হোল্ডিং ট্যাক্স, দুই বার্নার গ্যাসের বিল, দুইশ’ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল মওকুফ সুবিধা পান।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মেধাবী পুত্র-কন্যা, পুত্র-কন্যার পুত্র-কন্যা এবং পরবর্তী প্রজন্মের এইচএসসি উত্তীর্ণদের উচ্চশিক্ষার জন্য মাসে ১ হাজার টাকা করে পাঁচ বছর বঙ্গবন্ধু ছাত্রবৃত্তি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে শেষ বয়সে এসে হলেও, কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছেন একাত্তরের বীর সেনারা। পরবিার সমাজের কাছে মর্যাদা বেড়েছে তাঁদের।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। জনকণ্ঠকে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে এসেছিলেন বলেই তো আজকের বাংলাদেশটি আমরা পেলাম। তাঁরাই তো দেশের প্রকৃত মালিক। আজ আমরা সরকারে বসে তাঁদের সম্মানী ভাতা দিচ্ছি। তার মানে, তাঁদের সেই অভাব আছে। অনেক আগেই তাঁদের অভাব দূর করার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রের। সেই ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছি মাত্র আমরা। আবারও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আরও অনেক কাজ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
একই প্রসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স হয়েছে। আর বেশি দিন তাঁরা বাঁচবেন না। তাঁদের সর্বোচ্চ সম্মান জানানোর সুযোগ পেয়েছে রাষ্ট্র। সুযোগটা যতভাবে সম্ভব কাজে লাগানো উচিত। আখেরে তা মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখকে সহায়তা করবে বলে মনে করেন তিনি।
তবু হে বিজয়ী বীর মুক্তিসেনা/ তোমাদের এই ঋণ কোনোদিন শোধ হবে না...। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ কোনোদিন শোধ হবার নয়। ভবিষ্যতের সব সরকার এই ঋণের বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করবে এমনটিই আশা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির।