ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন

সেপ্টেম্বরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৬ জনের, আহত ৭৯৪

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ৩ অক্টোবর ২০২২

সেপ্টেম্বরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৬ জনের, আহত ৭৯৪

সেপ্টেম্বর মাসে ৪০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত এবং ৭৯৪ জন আহত হয়েছে

সারাদেশে গত সেপ্টেম্বর মাসে ৪০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত এবং ৭৯৪ জন আহত হয়েছে। নিহতের মধ্যে নারী ৬২, শিশু ৭৭। এর মধ্যে ১৮২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৬৯ জন, যা মোট নিহতের ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।  
দুর্ঘটনায় ১০৩ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৩ জন। রাজধানী ঢাকায় ২৯টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৩৭ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ৯টি নৌ দুর্ঘটনায় ৭৮ জন নিহত এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। ২১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় বেসরকারী সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩৪টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৫৮টি আঞ্চলিক সড়কে, ৭৩টি  গ্রামীণ সড়কে এবং ৩৬টি  শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬টি সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৮৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৫টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৪১টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৮টি অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ ॥ ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্প গতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি; গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় গত আগস্ট মাসে নিহত হয় ৫১৯ জন। গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছিল ১৬ দশমিক ৭৪ জন। সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিদিন নিহত হয়েছে ১৫ দশমিক ৮৬ জন। এই হিসাবে সেপ্টেম্বর মাসে প্রাণহানি কমেছে ৫ দশমিক ২৫ শতংশ। তবে প্রাণহানি হ্রাসের এই মাত্রা কোন টেকসই উন্নতির সূচক নির্দেশ করছে না। দুর্ঘটনায় দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬২ শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শিক্ষক নিহত হয়েছেন ১৪ জন।
এ বিষয়ে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাও কমছে না। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী যানবাহন চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছে।

গণপরিবহন সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা অতীব জরুরী। সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে।

×