
টিপু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র, মোটরবাইক জব্দের দাবি
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে হত্যায় যে অস্ত্র ও মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ডিবি। এ দুজনকে বিদেশী পিস্তল দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। জোড়া খুনে জব্দকৃত পিস্তলটিই ব্যবহার করা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া শূটার আকাশের বরাত দিয়ে ডিবি এমনটি জানিয়েছে। তবে আকাশের বরাত ছাড়া ব্যালেস্টিক পরীক্ষা করে কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে ডিবি নিশ্চিত হতে পারেনি যে, এটিই সেই পিস্তল কিনা।
হত্যাকা-ের সময় মোটরসাইকেল চালক শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীমসহ (৩৫) আরও ৫ জনকে গ্রেফতারের পর এমনটি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলো- তৌফিক হাসান ওরফে বাবু (৩৪), সুমন হোসেন (৩৫), এহতোশাম উদ্দিন চৌধুরী অপু (৩৭) ও শরিফুল ইসলাম হৃদয় (২৭)। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ গোড়ান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি বিদেশী পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি, ৩টি ম্যাগাজিন ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, মোল্লা শামীম বেনাপোল হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। পরে সংবাদ পেয়ে সোমবার তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর একে একে বাকিদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যে দক্ষিণ গোড়ান থেকে শরিফুল ইসলাম ওরফে হৃদয়কে গ্রেফতার করা হয়।
হৃদয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকা-ে ব্যবহৃত দুটি বিদেশী পিস্তল, ৮ রাউন্ড গুলি ও ৩টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। আর তৌফিক হাসান ওরফে বাবুর দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওই এলাকা থেকেই মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
জব্দ করা অস্ত্র টিপু হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, আমরা প্রথমেই মূল শূটার আকাশকে গ্রেফতার করেছি। আকাশ জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, যে অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, সেটিই আমরা উদ্ধার করেছি। তবে আকাশের স্বীকারোক্তির সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পিস্তলটির ব্যালেস্টিক পরীক্ষা করা হবে কিনা সেই বিষয়ে কিছুই জানাননি তিনি।
ডিবি প্রধান বলেন, এই মামলাটি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল ও দুটি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে। তারা স্বীকার করেছে এই মোটরসাইকেল ও অস্ত্র টিপু হত্যাকা-ে ব্যবহৃত হয়েছে। আকাশকে গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একে একে অন্যদের গ্রেফতার করা হয়।
হত্যার নির্দেশদাতা জিসান ও মানিক, পরিকল্পনায় মুসা জানিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, হত্যার নির্দেশদাতা ছিল বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও মানিক। আর হত্যা বাস্তবায়নে পরিকল্পনা করেন সুমন সিকদার মুসা ওরফে শূটার মুসা। বোচা বাবু হত্যার পর টিপুর সঙ্গে মুসার একটা দ্বন্দ্ব ছিল। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই মুসা এই হত্যাকা- ঘটনার পরিকল্পনা করে। সে পরিকল্পনা করে শামীমকে দায়িত্ব দেয়। আমরা মুসাকে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় এরইমধ্যে ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছি। তার উদ্দেশ্য ছিল টিপুকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া।
জিসান ও মানিক বিদেশ বসে এই হত্যার সঙ্গে যোগ দিয়ে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চেয়েছে। তারা মূলত জানান দিতে চেয়েছে যে তারা এখনও রয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতার করা হবে। এই হত্যার ঘটনায় জিসান ও মানিককে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এখন পর্যন্ত ২৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।