
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কোনদিনই সাড়ম্বরে পালন করেননি নিজের জন্মদিন। এবারও তাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে বাঙালীর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার একমাত্র বাতিঘর। এ দেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন। সারাদেশে তার কোটি কোটি নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভাকাক্সক্ষী, শুভানুধ্যায়ী। তাই আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন কর্মসূচীর এতটুকুও কমতি ছিল না।
সরকারী সফরে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও মঙ্গলবার দেশে দিনভর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুকন্যার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, কেক কেটে, মসজিদ-মন্দির-গীর্জা-প্যাগোডায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা সভা, দুস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, আনন্দ শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভার মাধ্যমে পালন করেছে সাহস সংগ্রাম নেতৃত্বে অবিচল, বাঙালীর উন্নয়ন-সমৃদ্ধির বাতিঘর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ৭৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে মঙ্গলবার নিবন্ধন ছাড়াই ৭৫ লাখ মানুষকে গণটিকা দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের আয়োজিত আলোচনা সভায় বিদগ্ধ আলোচকরা বলেছেন, ঘাত-প্রতিঘাত, সহস্র ষড়যন্ত্র ও মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার কর্মগুণে, যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে ছাত্রনেত্রী থেকে আজ বিশ্বনেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। সাম্প্রদায়িক জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে লড়াই করে অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নসহ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে ক্লান্তিহীন চেষ্টা করে যাচ্ছেন। স্বাধীনতাবিরোধীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সকল শক্তি আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবেই, কেউই সে পথে বাধা হতে পারবে না।
বঙ্গবন্ধুকন্যার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
এদিকে বাদ আসর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবন কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে। এতে কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শরিক হন। এছাড়া ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার, খ্রীস্টান এ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি), মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চ, তেজগাঁও জকমালা রাণীর গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ সকালে এক বিশাল আনন্দ মিছিল শোভাযাত্রা নিয়ে ধানমÐিস্থ ৩২ নম্বরে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিকেলে খামারবাড়িস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটুর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া শাহবাগ পাবলিক লাইব্রেরীর প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘প্রসূন শ্রদ্ধা-শিল্পকর্ম প্রদর্শনী- গোলটেবিল বৈঠক’ আয়োজন করেন ‘হাসুমণির পাঠশালা’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিল্পকর্ম প্রদর্শন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে দুপুরে মহানগর দক্ষিণ ও সন্ধ্যায় মহানগর উত্তর সেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রীর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে দুস্থ ও পথশিশুদের মাঝে ছাত্রলীগ খাবার বিতরণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা এই খাবার বিতরণ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে কেক কেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন পালন করা হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের শোভাযাত্রা ও কেক কাটা ॥ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা, আনন্দ শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভার আয়োজন করেছে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচন প্রস্তুত কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।