ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গিরীন চক্রবর্তীর সুরের আশ্রয়ে সঙ্গীতাসর

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৭ জুলাই ২০২১

গিরীন চক্রবর্তীর সুরের আশ্রয়ে সঙ্গীতাসর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা গানের অনন্য এক শিল্পী গিরীন চক্রবর্তী। সঙ্গীতের কাছে সমর্পিত এই সাধক শিল্পী একইসঙ্গে গান লিখেছেন, সুর দিয়েছেন এবং গেয়েছেন। সৃষ্টিশীল জীবনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হলেও জন্মেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ গ্রামে। দেশভাগের অভিঘাতে পাড়ি জমান পশ্চিমবঙ্গে। তার সঙ্গীতগুরু ছিলেন উপমহাদেশের বরেণ্য উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ও উস্তাদ আফতাব উদ্দিন খাঁ। অজস্র গানে সুরারোপ করেছেন এই সুরস্রষ্টা। কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লৌহকপাট’, ‘এই শিকল পরা ছল’সহ বহু গানে তিনি সুরযোজনা করেছেন। কালোত্তীর্ণ এই শিল্পীর রচিত ও সুরারোপিত গানের আশ্রয়ে অনুষ্ঠিত হলো অনলাইন সঙ্গীতাসর। তার সৃষ্ট পল্লীগান নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র। আর সে আয়োজনে গান শোনান গিরীন চক্রবর্তীর সুযোগ্য কন্যা চন্দা চট্টোপাধ্যায় চক্রবর্তী ও নাতনী শতভিষা চট্টোপাধ্যায়। অতিথি আলোচক হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশ নেন সঙ্গীতজ্ঞ মুত্তালিব বিশ^াস। রবিবার রাতে সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের ফেসবুক পেজে সম্প্রচারিত হয় এ অনুষ্ঠান। চন্দা চট্টোপাধ্যায় চক্রবর্তীর প্রথম পরিবেশনায় উঠে আসে গিরীন চক্রবর্তীর জন্মভ‚মির প্রতি স্মৃতিকাতরতা। সেই বার্তাকে কণ্ঠে ধারণ করে গেয়ে শোনান কিশোরগঞ্জে মাসির বাড়ি, আমার বাড়ি চাতলপাড়/বাপের বাড়ি বামুন বাইড়া, নিজের বাড়ি নাই আমার ....। পরের পরিবেশনায় গীত হয়- আমারে নি পরে তোমার মনে রে বন্ধু দূর বিদেশে গিয়া ...। এছাড়া এই শিল্পী গেয়ে শোনান ‘শিয়ালদহ গোয়ালন্দ, ‘তুল তুল পায়ে’, ‘আল্লা ম্যাঘ দে পানি দে’, ‘নাও ছাড়িয়া দে’, ‘ধরিতে না পারি গো’, ‘বাড়ি ছিলপদ্মা নদীর পাড়ে’, ‘চ্যাঙ মানুষ’, ও ‘ধিক ধিক আমার এ জীবনে’ শীর্ষক সঙ্গীত। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্প ও গবেষক ড. বিশ্বজিৎ রায়। আয়োজনটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি ছিল পল্লীগীতি নিয়ে রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দের অষ্টমপর্বের আয়োজন। বাংলা গানের ধারায় লোকগান ঐতিহ্যগতভাবেই প্রাচীন। একপর্যায়ে সেই ধারাটি আকৃষ্ট করে নাগরিক গীতিকবিদের। সেই সুবাদে নগরবাসী গীতিকবিদের গানের আশ্রয়ে উঠে লোকজ জীবনের কথা। শহরে বসেই গ্রাম বাংলার মানুষের সুখ-দুঃখ, বিরহ-বেদনাসহ পল্লী জীবনের চালচিত্র মেলে ধরেছেন লোকগানের আশ্রয়ে। মূলত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাধ্যমে লোকগানের ধারাটি ঠাঁই করে নেয় বিশ্ব পরিমণ্ডলে। পরবর্তীতে এই ধারাটি রবীন্দ্রনাথসহ সকল নাগরিক গীত রচয়িতাদের হাতে গতিশীল হয়। নামকরণের বিবর্তনে সেসব হয়ে ওঠে পল্লীগীতি বা পল্লী গান। মহামারীর দুঃসময়ে অবরুদ্ধ জীবনে সংস্কৃতি অনুরাগী শ্রোতার হৃদয়ে প্রশান্তি ছড়াতে চলছে ধারাবাহিক নাগরিক পল্লী গান শীর্ষক এই সঙ্গীতায়োজন।
×