স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুরনো ঢাকার মানুষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন। তাই পুরনো ঢাকার সমস্যার কথা ভালোই জানা তার। বুধবার নির্বাচনী প্রচারে এলাকার সমস্যা সমাধানে ভোটারদের আশ্বাস দিয়েছেন জাপার এই মেয়র প্রার্থী।
বলেছেন, পুরাতন শহরের বেশির ভাগ রাস্তা সরু। যার কারণে এ এলাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে যথাসময়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসতে পারে না। রাস্তা সরুর কারনে অসুস্থ রোগী যথাসময়ে হাসপাতালে পৌছাতে পারেন না। আমি নির্বাচিত হতে পারলে সরু রাস্তা প্রশস্ত করব।
মিলন বলেন, প্রতিদিন প্রায় পঞ্চাশ লাখ ভাসমান লোক ঢাকায় আসেন। তাদের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট নেই। আমি নির্বাচিত হলে উন্নত মানের টয়লেটের ব্যবস্থা করবো। উন্নত শহরের আদলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আমি পুরনো ঢাকার সন্তান। আমার চোখের সামনে মুক্ত ঢাকা অন্ধকার হয়েছে। চোখের সামনে বাসযোগ্য ঢাকা এখন সব কিছুতে ঢেকে গেছে। এখন নির্মল বায়ু নেই। দূষণে জর্জরিত নগরী। যেখানে ঝুঁকিতে বসবাস করছেন সবাই। এই অবস্থায় আমি জানি কিভাবে ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে হবে। উন্নত শহরের আদলে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে এই শহরকে।
সকাল থেকে দিনব্যাপী পুরান ঢাকার শহীদ নগর, আমলিগোলা দ্বিতীয় লেন, বউবাজার, রাজনারায়ণধর রোড, বালুঘাট মসজিদ রোড, গঙ্গারাম বাজার, রিশিপারা, হরিমন্দির রোড, চৌধুরী বাজার, নগর বেলতলী রোড, নবাবগঞ্জ, কিল্লার মোড়, শ্মশানঘাট এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারণায় অংশ নেন মিলন। তখন ভোটারদের কাছে আসন্ন সিটি নির্বাচনে ভোট আবেদন করে স্বপ্নের ঢাকা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রচারণাকালে তিনি বেশ কয়েকটি পথসভায় বক্তব্য রাখেন। গণসংযোগকালে হাজী মিলনের দুই পুত্র রাকিব উদ্দিন আবির, শাকিব উদ্দিন শিফান ছাড়াও স্থানীয় জাপা নেতা মোক্তার হোসেন, আকতার হোসেন আউয়াল, কামাল হোসেন, মকবুল হোসেন, শারাফত হোসেন জুয়েল, রাহাদ ইসলামসহ স্থানীয় জাপার বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় বারের মতো বিভক্ত ঢাকা সিটি নির্বাচনে দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হয়েছেন জাপা প্রেসিডিয়ামের সদস্য মিলন। গত নির্বাচনে অংশ নিয়ে চার হাজারের কিছু বেশি ভোট পান তিনি। এবার দলের পক্ষ থেকে দুই সিটিতে দু’জনকে মনোনয়ন দেয়া হলেও উত্তরের মেয়র প্রার্থী নগরীর ভোটার না হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এখন জাপার মেয়র প্রার্থী একজন। দলের এই প্রার্থীর জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের কোন দরদ নেই। দরজায় কড়া নাড়ছে ভোট। অথচ ১০ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পর এখন পর্যন্ত মিলনের পক্ষে দলের শীর্ষ নেতাদের কাউকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি। এমনকি দল প্রধানও জি এম কাদের এ ব্যাপারে নিরব ভূমিকা পালন করে চলছেন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য নামকাওয়াস্তে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হলেও কার্যত তা না থাকার সমান। তাছাড়া দপ্তর ও প্রচারের জন্য কোন কমিটি নেই। যা অন্য দলের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে রয়েছে।
মিলনের ঘনিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মেয়র প্রার্থীর নিজ উদ্যোগে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রতিদিন। আতœীয়, পরিচিত, সমর্থকরাই তার মূল সহযোগিতায় রয়েছেন। তবে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও দলের মহানগর পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী মাঝে মধ্যে প্রচারে যোগ দিচ্ছেন। সার্বিক বিবেচনায় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দলের কোন রকম স্বদিচ্ছা বা তৎপরতা নেই। নামেমাত্র নির্বাচনে প্রার্থী দেয়া ও অংশ নেয়া নিশ্চিত করেই ঘুমে আছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
সেন্টুর প্রচার মিছিল ॥ মোহাম্মদপুরের ৩১ নং ওয়ার্ডের জাতীয় পার্টি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শফিকুল ইসলাম সেন্টুর ঠেলাগাড়ী মার্কায় ভোট চেয়ে নূরজাহান রোড, তাজমহল রোড, বাবর রোড, শের শাহ্ রোড ও টাউন হল কাঁচাবাজারে বুধবার বিকেলে জাপা নেতারা প্রচার মিছিলে অংশ নেন।
এ সময় জাপা নেতারা ছাড়াও মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার বণিক সমিতির সভাপতি লুতফর রহমান বাবুল, টাউনহল মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দলু, শেরশাহ্ রোড ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি সিদ্দিক আবেদিনসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রচার মিছিলে অংশ নেন।